
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ | রাজনীতি » শোক আর শোক –মৃত্যুর মিছিল প্রাণ গেল ৬ শিশুর
শোক আর শোক –মৃত্যুর মিছিল প্রাণ গেল ৬ শিশুর
পক্ষকাল ডেস্ক-হাবিবুর রহমান সোহাগ/সুত্র যুগান্তর
রাজধানীর রূপনগরে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঝড়ে গেছে ৬ শিশুর প্রাণ। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। এরমধ্যে কমপক্ষে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রূপনগরের মনিপুর স্কুলের পূর্ব পাশে ১১ নম্বর সড়কের মাথায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। আহতদের ঢামেক, সোহরাওয়ার্দীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘কারও হাত নেই, কারও পা নেই, কারও নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। কারও চেহারা ঝলছে গেছে। ছোপ ছোপ কালচে তাজা রক্ত রাস্তায় গড়াচ্ছে। আনুমানিক ৬-১৪ বছর বয়সী ১০-১২ জন ক্ষুদে শিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল। উফ! বীভৎস ও মর্মান্তিক সেই দৃশ্য দেখে বুক আঁতকে ওঠে। হতাহতদের স্বজনের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে পুরো রূপনগরের বাতাস। গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। এরপর নিহত ও আহতদের হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যারা নিহত হয়েছে, তারা হল-রমজান (৮), নূপুর (৭), শাহীন (৯), ফারজানা (৬), রুবেল (১১) এবং রিয়া (৭)।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রূপনগর থানার এসআই লোকমান হোসেন জানান, যাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। তবে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঢামেক হাসপাতালে যাদের ভর্তি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১২ জন শিশু, দুইজন পুরুষ এবং একজন নারী রয়েছেন।
তারা হলেন- জুয়েল (২৫), সোহেল (২৬), জান্নাত (২৫), তানিয়া (৮), বায়েজিদ (৭), জামেলা (৭), মিজান (৭), মীম (৮), ওজুফা (৯), মোস্তাকিম (৮), মোরসালিনা (৯), নিহাদ (৮), অর্নব ওরফে রাকিব (১০), জনি (১০) এবং সিয়াম (১১)। এদের মধ্যে সোহেল হলো বেলুন বিক্রেতা। জুয়েল রিকশা চালক। জান্নাত বাসা-বাড়িতে কাজ করে। শিশুদের বেশিরভাগই নিন্মআয়ের পরিবারের।
ঢামেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আলাউদ্দিন জানান, আমাদের এখানে আসা ১৫ জনের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। আহতদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ূয়া সাংবাদিকদের বলেন, রূপনগরের ঘটনায় আমাদের এখনে ১২ জন হতাহত এসেছে। এর মধ্যে ৫ জন মৃত। আহত অবস্থায় ৭ জন এসেছিল। তাদের মধ্যে দুইজন এখন ভর্তি আছেন। তারা শংকামুক্ত। এছাড়া ২ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী হাসপাতালে রেফার করেছি। তাদের শরীরের ৬০-৭০ ভাগ পুড়ে গেছে। এই দুইজনের অবস্থা আশংকাজনক।
তিনি বলেন, নিহতদের দেহ বিকৃত অবস্থায় আছে।
রূপনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, মনিপুর স্কুলে সামনে এক ব্যক্তি সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ভরে শিশুদের কাছে বিক্রি করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। আহতদের মধ্যে কারও কারও হাত-পা বা শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, যেভাবে গ্যাস তৈরি করে বেলুনে ভরা হতো সেটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
সাবিনাআখতার তুহিন এর প্রতিক্রিয়া —
শোক আর শোক –মৃত্যুর মিছিল তা যদি হয় নিষ্পাপ শিশুর তা অত্যন্ত বেদনার ।বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে রুপনগর বস্তির ৫ জন শিশুর ঘটনাস্হলে মৃত্যু হয় , নিহত শিশুরা হলো- রমজান (৮), নুপুর (৭), শাহীন (৯), ফারজানা (৬) রুবেল (১১)। ঢাকা মেডিক্যাল সহ সব হাসপাতালে আহত আছে ২০ জন ,৩ জনের অবস্হা গুরুতর খারাপ ।সকালে কমিশনার কাজী টিপুর। ভাগিনা মারা যাওয়াতে মনটা খারাপ ছিলো ।আবার বিকেলের দিকে এত শিশুর মৃত্যুর খবর খুব বেদনার ।বস্তির গরীবের সন্তান ,তাই তাদের পাশে যাদের থাকার কথা ,তাদের দেখলাম না ।একজন গরীব বা ধনী মানুষ ,যারই আদুরের সন্তান বুক থেকে চলে যায় ,তখন সকলেরই এক হাহাকার হয় ।আজকে যদি নামকরা স্কুলের সামনে এ দুর্ঘটনা হতো তখন অনেক মুখই পাশে থাকতো ।আমি কথা বলেছি দুর্যোগ মন্ত্রীর সাথে তিনি বলেছেন তিনি নিহত পরিবার কে সহযোগিতা ডিসির মাধ্যমে করবেন ।আমি সকল কে অনুরোধ করবো এই বস্তির ছোট সোনামনিদের পাশে থাকুন ,সহযোগিতা হাত কেবল সরকার না আমরা সকলে এগিয়ে আসি ।সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ ,আর শিশু নিষ্পাপ ,তাই আল্লাহ্ নেক বান্দার কাজ হবে দরিদ্রের পাশে থাকা ।রুপনগর থেকে সোহরাওয়াদী হাসপাতাল পরে ঢাকা মেডিক্যাল সর্বত্র বাবা মায়ের আর্তনাদ দেখে ,আমি মর্মাহত ।আইনে আছে এ ধরনের গ্যাস ব্যবহার যত্রতত্র করা যাবে না কিন্তু তা কে মানবে ।আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে অনুরোধ করবো আর যেনো বেলুনে গ্যাস ব্যবহার না হয় এরজন্য কঠিন এ্যাকশনে যাবেন আশাকরি ।যখনই দুর্ঘটনা হয় তখন কেবল মানুষ কথা বলে কিন্তু কেউ কোন সতর্কতামূলক ব্যবস্হা আগে নেয় না ।আমরা সব দল মিছিল মিটিং এ বস্তির লোক নিয়ে মিছিল বড় করি কিন্তু বিপদে কয়জন থাকি ।আমি চামচামি পছন্দ করি না কিন্তু সত্যি বলতে গরীব কে থাকার জায়গা ,খাওয়ার ব্যবস্হা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরই যেন ভাবনা ,বাকিরা নিরব দর্শক ।আমি যতটুকু পেরেছি সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি এবং সবসময় আমার এলাকার সাধারন মানুষের পাশে থাকবো ।