শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ৭ নভেম্বরের ঘটনায় কর্নেল তাহের মহানায়ক আর জিয়া খলনায়ক
৭ নভেম্বরের ঘটনায় কর্নেল তাহের মহানায়ক আর জিয়া খলনায়ক
পক্ষকাল সংবাদ-
৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান দিবসে জাসদের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
যারা ৭ নভেম্বরকে অফিসার হত্যা বা বিপ্লবী সংহতি হিসাবে চিিত করার অপচেষ্টা
করে তারা আসলে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী, জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতা
অপকর্ম ও ক্ষতালিপ্সু অফিসারদের কামড়াকামড়ির কুৎসিত ঘটনা আড়াল করতে চায়:
হাসানুল হক ইনু
জাসদ সভাপতি, তথ্যমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল
আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে সিপাহী বিদ্রোহ, সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান ছিল
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা, অবৈধ ক্ষমতা দখল, সংবিধান লংঘন, সামরিক
শাসন জারি, সেনাবাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্ষমতালিপ্সু
অফিসার ব্যক্তিগত ক্ষমতা দখলের জন্য পাগলা কুকুরের মত কামড়াকামড়ি বন্ধ করতে,
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা-সংকট দূর করতে এবং সেনাবাহিনীসহ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র
ব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে এক মহান বিপ্লবী প্রচেষ্টা। জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতায়
সিপাহী-জনতার অভ্যূত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। জনাব ইনু বলেন, জিয়া
সিপাহীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে রক্তের হুলি
খেলায় মেতে উঠে। কর্নেল তাহেরকে সাজানো মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে প্রহসন করে
ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে।
জনাব ইনু বলেন, পরবর্তীতে কয়েকশত অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করে। জলিল, রব,
সিরাজুল আলম কান, হাসানুল হক ইনু, রবিউল আলমসহ জাসদের নেতাদের সামরিক আদালতে
মিথ্যা মামরায় প্রহসণমূলক বিচারে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়ে
অমানবিক কারানির্যাতন চালায়। জনাব ইনু বলেন, সিপাহী জনতার অভ্যূত্থান
প্রচেষ্টা জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতায় সফল না হলেও ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামোর উপর
আঘাত হানে। জনাব ইনু বলেন, ইতিহাস ৭ নভেম্বরের ঘটনায় কর্নেল মহানায়ক আর জিয়া
খলনায়ক হিসাবে চিত করেছে। তিনি বলেন, যারা ৭ নভেম্বরকে অফিসার হত্যা বা
বিপ্লব সংহতি হিসাবে চিিত করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে তারা আসলে বঙ্গবন্ধু ও
জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী ও ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের কামড়াকামড়ির কুৎসিত ঘটনা
আড়াল করতে চায়। জনাব ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে বলেন, জিয়া, খালেদ, শাফায়াত
জামিলসহ সবাই কি আঙ্গুল চুষছিল? খালেদ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের শায়েস্তা করতে না,
নিজে ক্ষমতা দখল করতে অভ্যূত্থান করেছিল। খালেদ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার
খুনীদের নিরাপদে দেশত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়। খালেদ খুনি মোস্তাককে আটক করাতো
দূরের কথা তার সাথেই যোগসাজশে নিজে সেনাপ্রধানের ব্যাজ লাগান। জনাব ইনু বলেন,
শহীদ কর্নেল তাহের শুধু আদালতের রায়েই একজন মহান দেশপ্রেমিক বিপ্লবী না,
কর্নেল তাহের জনতার বিচারেও একজন মহান দেশপ্রেমিক বিপ্লবী। জাসদ কর্নেল
তাহেরের চেতনাকে ধারণ করেই শোষন–বৈষম্য-বঞ্চনামুক্ত দেশ গড়ার সংগ্রাম করে
যাচ্ছে। তিনি বলেন, জাসদের সুশাসনের জন্য সংগ্রাম আর শেখ হাসিনার শুদ্ধি
অভিযান একে অপরের পরিপূরক। তিনি কর্নেল তাহেরের মত সাহস নিয়ে দুর্নীতিবাজ
লুটেরাদের আকড়ায় আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত হতে জাসদের নেতা-কর্মীদের প্রতি
আহ্বান জানান।
৭ নভেম্ব সিপাহী জনতার অভ্যূত্থান দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর জাসদের উদ্যোগে আজ
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের
মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রদান অতিথির ভাষণে জনাব ইনু এসব কথা বলেন।
জাসদ ঢাকা মহানগর কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক নুরুল আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, শহীদ কর্নেল
তাহেরের অনুজ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাবেক উপাচার্য জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য
অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, জাসদ নেতা ফজরুর রহমান বাবুল, শফি উদ্দিন মোল্লা,
শহীদুল ইসলাম রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু,
সাইফুজ্জামান বাদশা, মীর্জা মোঃ আনোয়ারুল হক, মাইনুর রহমান, এ কে এম শাহ আলম,
এড. মহিবুর রহমান মিহির, ইদ্রিস আলী, সৈয়দা শামীমা সুলতানা হ্যাপী, মাহবুবুর
রহমান, আহসান হাবিব শামীম প্রমূখ।