আজ যুবলীগের সম্মেলন
পক্ষকাল সংবাদ-
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস (সম্মেলন) আজ ২৩ নভেম্বর, শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। সকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কংগ্রেস উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দ্বিতীয় সেশনে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল অধিবেশন।
সম্মেলন আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে যুবলীগ। সম্মেলনে কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের এবং আমন্ত্রিত অতিথি মিলে প্রায় ৩০ হাজার লোকের সমাগম হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সারা দেশের ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা ও ৮টি জেলার মর্যাদাসম্পন্ন বৈদেশিক শাখার প্রায় ৩ হাজার কাউন্সিলর ও ২৫ হাজার ডেলিগেট এবং ৮ হাজার অতিথিকে কংগ্রেসে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কমিটিতে একঝাঁক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আনা হবে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণির বড় ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান এবং যুবলীগের বর্তমান কমিটির নেতাদের মধ্য থেকে একজনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হতে পারে এই কংগ্রেসে। তবে সেখানে এগিয়ে থাকছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক যে ছাত্রলীগ নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- বাহাদুর বেপারী, অজয় কর খোকন, লিয়াকত সিকদার, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন ও এনআই আহমেদ সৈকত।
গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একটি জাতীয় গণমাধ্যমে বলেন, ‘পরশ চেয়ারম্যান হচ্ছেন, এটা মোটামুটি চূড়ান্তই বলা চলে। সাধারণ সম্পাদকের বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন শেখ ফজলে শামস পরশ। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। পরশের পাশপাশি যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিমের দুই ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম শীর্ষ পদ পাওয়ার দৌড়ে ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা তাদের ব্যাপারে আগ্রহী নন।
গতকাল সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে এসে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব প্রসঙ্গে বলেন, ‘যুবলীগের নতুন নেতা কে হবেন এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। সেটা আগামীকাল (আজ শনিবার) যখন দ্বিতীয় অধিবেশন হবে, সেখানে কাউন্সিল সেশনে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রার্থী হিসেবে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘অধিক প্রার্থী থাকলে তাদের একজন হওয়ার জন্য সময় দেব। সেই সময়সীমার মধ্যে সমঝোতা না হলে উপস্থিত নেতারা এবং সর্বোপরি আমাদের নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলাপ করে নতুন কমিটির চেয়ারম্যান-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করব।’
সম্প্রতি চলমান শুদ্ধি অভিযানে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে সবচেয়ে বেশি যুবলীগ নেতাদের নাম আলোচনায় উঠে আসে। আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, কমিটি বাণিজ্য, অনুপ্রবেশসহ নানা অপকর্মে হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করাই যুবলীগের নতুন কমিটির মূল চ্যালেঞ্জ হবে।
এদিকে জানা গেছে, আজকের কংগ্রেসে বর্তমান চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, শেখ ফজলুর রহমান মারুফ ও শেখ আতিয়ার রহমান দীপুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
যুবলীগের দপ্তর সূত্র জানায়, গণভবন থেকে ‘সবুজ সংকেত’ না মেলায় তাদের দাওয়াতপত্র দেয়া হয়নি। ক্যাসিনোসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে তাদের সম্মেলন প্রস্তুতি থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
আরো জানা যায়, কংগ্রেসকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে নেতাদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কোনো নেতা এবারের কংগ্রেসে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারছেন না।
যুবলীগের সর্বশেষ জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালে। তখন ওমর ফারুক চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও হারুনুর রশিদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিলো।