মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর | রাজনীতি » কালীগঞ্জে সাড়ে চার বছর পর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন আজ
কালীগঞ্জে সাড়ে চার বছর পর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন আজ
তৈয়বুর রহমান (গাজীপুর) প্রতিনিধি ঃ
সাড়ে চার বছর পর আজ মঙ্গলবার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার শহীদ ময়েজউদ্দিন ফেরিঘাট সংলগ্ন রেলওয়ে ঈদগাঁহ ময়দানে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। গত ১৩/৫/২০১৫ তারিখে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন মেহের আফরোজ চুমকি এমপির চাচা প্রয়াত শাহাবুদ্দীন আহমেদ। তিনি মৃত্যুবরণ করার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চুমকির নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ সুসংগঠিতভাবে পরিচালিত হয়ে উপজেলার ৭২টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এবং মেধা, দক্ষ, কর্মীবান্ধব ও ত্যাগী নেতাদের সমন্বয়ে সাতটি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা বলেন, চুমকি আপা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এলাকার উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। দলের নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যের মতো আগলিয়ে রাখছেন। আমাদের সেই প্রিয় নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকি আপাকে আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে চাই । ওনি না চাইলেও, আমরা চাই তিনিই হবেন আমাদের অভিভাবক ও দলের অভিভাবক। তিনির হয়ে আমরা দলের নেতাকর্মীরা সভাপতি প্রার্থীর জন্য প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, কালীগঞ্জের মাটি ও মানুষের একমাত্র আস্থা, প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপিকেই কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে তৃণমূল নেতৃবৃন্দদের একমাত্র চাওয়া। কালীগঞ্জের সাধারন মানুষের মাঝে শান্তি ও এলাকায় উন্নয়নমুখী কার্য পরিচালনার পাশাপাশি সাংগঠনিক উন্নতি সাধনের জন্য চুমকি আপার বিকল্প নেই, থাকতেও পারে না। আমরা তৃণমূল নেতাকর্মীরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা এলাকার সাধারন মানুষের দাবিকে মূল্যায়ন করবেন। আওয়ামী লীগ সংগঠনকে একতাবদ্ধ করার লক্ষ্যে মেহের আফরোজ চুমকি এমপিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করার মাধ্যমে জেলার নেতৃবৃন্দ সেই গুরুদায়িত্ব তার উপর অর্পণ করবেন।
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেন, সেই ‘৯৬ থেকে ২০১৯- রাজনীতির মাঠে দীর্ঘ ২৩ টি বছর পার করছি। আমার সৌভাগ্য যে, আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো আমার সময়ে এসে সম্পন্ন করতে পারছি। আমি যেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হই তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা চাচ্ছেন। আমি পদের জন্য রাজনীতি করছি না। আমি রাজনীতি করছি জনগণের সেবা করার জন্য।
সাধারন সম্পাদক পদটি ঘিরে তৃণমূলে বর্তমান সাধারন সম্পাদক আব্দুল গণি ভূইয়া ও যুগ্ম সম্পাদক আবু বকর চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। আব্দুল গণি ভূইয়া ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেলে তিন তিনবার ভিপি নির্বাচিত হন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় তার নেতৃত্বে মিছিল চলাকালীন কালীগঞ্জ উপজেলা চত্বর হতে বিডিআর বাহিনী তাকে আটক করে তার ওপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালায়। দীর্ঘ ৭ মাস ১১ দিন অন্ধকার কারাগারে থাকতে হয়েছিল তাকে। ২০০৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হন এবং ১৩/৫/২০১৫ তারিখে সম্মেলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বারের মতো কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন আব্দুল গণি ভূইয়া। তৃণমূল নেতাকর্মীরা স্বচ্ছ ও কর্মীবান্ধব এই নেতাকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে আবারও চান। উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাধারন সম্পাদক আব্দুল গণি ভূইয়া বলেন, তৃণমূল নেতৃবৃন্দরা চায় আমি আবারও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু আমি এবারের সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছি না। এবার কাকে সাধারন সম্পাদক করবেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা জানেন।
অন্যদিকে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবু বকর চৌধুরীকে তৃণমূলের আংশিকসহ উপজেলার শীর্ষস্থানীয় নেতারা চাচ্ছেন সাধারন সম্পাদক পদে। তিনিও ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। আবু বকর চৌধুরী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পর তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য পদে রয়েছেন।
ছবির ক্যাপশন ঃ
১. সভাপতি প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি
২. সাধারন সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল গণি ভূইয়া
৩. সাধারন সম্পাদক প্রার্থী আবু বকর চৌধুরী