রোদের আলোয়ও দেখা যায়না চারপাশ
পক্ষকাল সংবাদ-
রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, পোস্তগোলা ও গাবতলী এলাকায় সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ধুলা। সেখানকার বাতাস সাধারন মানুষের জন্য পরিণত হয়েছে বিষে। ধুলার রাজ্য হিসেবে পরিচিত এসব এলাকায় ধুলার দূষণ নিয়ন্ত্রণে উচ্চ আদালতের পানি ছিটানোর নির্দেশ থাকলেও সিটি করপোরেশন তা মানছে না। আদালতের নির্দেশনা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পরও বায়ুদূষণ রোধে সরকারের তৎপরতা শুধু খবরের শিরোনামেই সীমাবদ্ধ। অবকাঠামো নির্মাণের বেলায়ও আদালতের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। ফলে দূষণ জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। কয়েকটি এলাকায় দমবন্ধ হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন।
বায়ুদূষণে চলতি মাসে বেশ কয়েকবার আলোচিত ভারতের রাজধানী দিল্লিকে ছাড়িয়ে গেছে ঢাকা। দিল্লিতে একাধিকবার পরিবেশগত জরুরি অবস্থাও জারি হলেও ঢাকায় নেই কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ। রাজধানীতে দূষণের মানমাত্রা বিপজ্জনক অবস্থায় চলে গেলে তৎপর হয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তখন রাজধানীর কিছু সড়কে পানি ছিটাতে দেখা যায়। দূষণ সৃষ্টিকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়। কিন্তু দূষণের ব্যাপক উৎসের তুলনায় সেগুলো খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বায়ুদূষণের উৎসে বড় রকম ভূমিকা না রাখলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। অন্যদিকে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আদালতের নির্দেশনা না মেনেই অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে। চারপাশ ঘেরাও করে কাজ করা এবং নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখার কথা বলা হলেও তা মানা হচ্ছে না। নির্মাণ কাজ চলার সময় দিনে একাধিকবার পানি ছিটানোর কথা থাকলেও সেটি করতে দেখা যায় না। গত তিন দিন রাজধানীর পুরান ঢাকা ঘুরে ভয়াবহ বায়ুদূষণের চিত্র দেখা গেছে। দুপুরে প্রখর রোদের আলোয়ও জুরাইন- পোস্তগোলার সড়ক এবং নয়াবাজার থেকে বুড়িগঙ্গা সেতু পর্যন্ত চারপাশ অন্ধকার দেখাচ্ছিল। টিপু সুলতান রোডে একাধিক নির্মাণ কাজ চলছে। তবে কোথাও আদালতে নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যায়নি। নির্মাণসামগ্রী খোলা রাখায় ধুলা উড়ছিল।
বাড়ি নির্মাণে চারপাশ ঘিরে রাখা এবং নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখার কোনো নিয়মই মানা হচ্ছেনা। বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে, তারা এসব নিয়মের বিষয়ে অবগত নন বলে দাবি করেন। এলাকাবাসী জানায়, সিটি করপোরেশনের পানি এই এলাকায় এক দিনও ছিটানো হয়নি। দিনরাত সমানে ধুলা ওড়ে। ঘর থেকে বাইরে পা রাখলেই ধুলায় একাকার। কর্মস্থলে যেতেও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। এদিকে আবাসিক এলাকার সাধারনের ভাষ্যমতে, ‘সারাদিন ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। কোনো কারণে কয়েক মিনিটের জন্য খুললেই ঘরের ভেতরটা ধুলায় ভরে যায়। বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। স্কুলে যাওয়ার সময় মুখোশ (মাস্ক) পরিয়ে দিই। তাতেও ধুলার দূষণ থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। সব মিলিয়ে খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে দমবন্ধ অবস্থায় বসবাস করছি।’