বুধবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » সমগ্র বাংলাদেশ আজ দুর্ঘটনার শিকার : তথ্যমন্ত্রী
সমগ্র বাংলাদেশ আজ দুর্ঘটনার শিকার : তথ্যমন্ত্রী
পক্ষকাল প্রতিবেদক : আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র উদ্যোগে আয়োজিত ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, সমগ্র বাংলাদেশ আজ দুর্ঘটনার শিকার।তিনি বলেন, ‘সড়কে দুর্ঘটনা, রাজনীতিতে দুর্ঘটনা, ইতিহাসে দুর্ঘটনা এবং সংস্কৃতি চর্চায় দুর্ঘটনা আমাদের দেশে এখন চলমান। সড়কে দুর্ঘটনা চলছে নিয়ম পালন না করা ও নিয়ম ভাঙার শাস্তি না পারওয়ার কারণে আর রাজনীতিতে দুর্ঘটনা হচ্ছে অপরাধীদের দায়মুক্তি, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল অথবা ক্ষমতা বহির্ভূত কাজের জন্য শাস্তি না দেয়া কিংবা শাস্তির বাইরে রাখার চেষ্টা করার কারণে।’
‘আমরা সংবিধান মানি না, আইন মানি না- এজন্য রাজনীতিতে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতিহাস বিকৃতি ও প্রকৃত ইতিহাসকে নির্বাসনে পাঠানোর চক্রান্তই হচ্ছে ইতিহাসের বড় দুর্ঘটনা। হাসানুল হক ইনু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘বাংলাদেশে একটি সশস্ত্র যুদ্ধ হয়েছে এ কথা সুস্পষ্ট; এখন বলা হচ্ছে এদেশে নাকি কোনো যুদ্ধই হয়নি। ইতিহাস বিকৃতির এই চেষ্টা সহ্য করা যায় না।’
যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার ও ঘাতক চালকদের পক্ষে ওকালতি সমাজকে অনিরাপদ ও অসুস্থ করার ঝুঁকিতে ফেলে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংগঠনের সভাপতি শরীফ রফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তরিকুজ্জামান তরিক বক্তৃতা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দশ হাজার বছর ধরে আমরা বাঙালি, এখন বলা হচ্ছে পৌষমেলা ও পহেলা বৈশাখ ধর্মবিরোধী। এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতিকে ইসলামী লেবাস পরানো ও গণতন্ত্রকে ইসলামিকরণ করার। এসব ষড়যন্ত্র সাংস্কৃতিক দুর্ঘটনারই অংশ।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন সচল, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ শান্তিতে আছে। কিন্তু বোমা হামলা, নাশকতা, অন্তর্ঘাত ও জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাকে দুর্ঘটনার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অন্তর্ঘাতমুলক কার্যকলাপ দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করে দিচ্ছে।
হাসানুল হক ইনু জনগণকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
তদবির ও দুর্নীতির কঠোর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তদবির ও দুর্নীতির কারণে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাচ্ছে। এ দু’টি বন্ধ করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা অনেকাংশে কমে যাবে।’
দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের অবহেলা, অসতর্কতা, গাফলতি ও অযোগ্যতার কঠোর সমালোচনা করার জন্য তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও পঙ্গু হচ্ছে, এবং মারা যাচ্ছে তারা যথাযথ ক্ষতিপূরণ পেল কি না তা ধারাবাহিকভাবে প্রচারের দায়িত্ব মিডিয়াকেই নিতে হবে। কারণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত/সম্প্রচারিত সমালোচনায় প্রশাসনিক কর্মকান্ডকে সংশোধন করে দেবে।
তিনি সকল গণমাধ্যমকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আপসহীন ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান ।
তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণের আইন যেমন রয়েছে, তেমনি রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করানো কিংবা যত্রতত্র পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে, গাড়ি কেনা ও চালানোর আইন আছে, রয়েছে গাড়ির যন্ত্র পরীক্ষার আইনও আছে।
বিভিন্ন ধাপে যে আইন আছে - তার যথাযথ প্রয়োগই সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পারে বলে তথ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।