রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » জিয়া ছিলেন খন্দকার মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত: প্রধানমন্ত্রী
জিয়া ছিলেন খন্দকার মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত: প্রধানমন্ত্রী
পক্ষকাল সংবাদ -
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিয়া খন্দকার মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোক ছিলেন বলেই তিনি তাঁকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়া জড়িত না-ই থাকবেন, তবে খন্দকার মোশতাক তাঁকে কেন সেনাপ্রধান বানিয়েছিলেন?’
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে মনে রাখতে হবে যে বাংলাদেশের মাটিতে মীর জাফর ও খন্দকার মোশতাকের মতো বিশ্বাসঘাতকেরা জন্মেছিলেন এবং যুগে যুগে ‘খুনি জিয়ার’ মতো মানুষ আসতেই থাকবে। খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ ঘোষণা করেছিলেন। আর জিয়াউর রহমান সেই অধ্যাদেশকে আইন হিসেবে পাস করেন।
স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। ভবিষ্যতে জনগণের ভাগ্য নিয়ে যেন আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থাকতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য শহীদ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান লঙ্ঘন করে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত শুরু হয়। তিনি জেল থেকে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেন এবং ৭ খুনের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শফিউল আলম প্রধানকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন।’
শেখ হাসিনা ১৯৭৪-এর দুর্ভিক্ষকে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ উল্লেখ করে বলেন, তৎকালীন খাদ্য সচিব আব্দুল মোমেন ছিলেন এ দুর্ভিক্ষের মূল হোতা। ‘আব্দুল মোমেনকে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরে এ ধরনের আরও অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়। এর কারণ ছিল বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত করা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর হত্যাকারীরা বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ইসলামিক প্রজাতন্ত্র রাখে। কিন্তু জনগণ এটি গ্রহণ না করায় তারা তা ধরে রাখতে পারেনি।
জিয়াউর রহমান অনেক হত্যাকাণ্ড ও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়ার সামরিক শাসনের আমলে একটার পর একটা অভ্যুত্থান হয় এবং এসব অভ্যুত্থানে অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে হত্যা করা হয়। এসব সামরিক কর্মকর্তারা জানতেনই না তাদের অপরাধ কী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয় এবং জনগণকে ভুল পথে চালিত করতে একটি মিথ্যা ইতিহাস রচনা করা হয়। তিনি বলেন, ‘কিন্তু কেউ সত্যকে চিরতরে মুছে ফেলতে পারে না, এটি এখন পুরো বিশ্বসহ বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুদ্ধিজীবী যারা দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের নাম মুছে ফেলতে অশুভ চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘কিন্তু সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি, কারণ আত্মত্যাগ কখনই বৃথা যায় না, এবং এটি এখন বাংলাদেশে প্রমাণিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে মর্যাদার সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারলে, শহীদদের আত্মত্যাগ ও মহান অবদান চিরকালের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল মতিন, আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।