ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথের বেহাল অবস্থা
পক্ষকাল সংবাদ-
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথ। ১৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটির সংস্কার হয়না বহুদিন ধরে। মেরামতের অভাবে এ পথে ট্রেন চলাচল হয়ে পড়েছে অনিরাপদ। গত দুই মাসের মধ্যেই পাঁচবার ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। আর এ রেলপথটির বেহাল দশার জন্য রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতিকেই দায়ী করছেন সচেতন মহল।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, রেললাইনের অনেক স্থানেই পাথর সরে গেছে, দেখা গেছে সবুজ ঘাস। কোথাও কোথাও সরে যাচ্ছে মাটি। প্রতিনিয়তই ক্লিপ চুরি হচ্ছে। একাধিক অরক্ষিত ক্রসিংও রয়েছে রেলপথটিতে। সেতুগুলোতে বাঁশের বদলে দেখা মিলেছে কাঠের হালকা সেফটি। অথচ এই রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভৈরবে রয়েছে শতাধিক কর্মচারী। তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে সহকারী নির্বাহী প্রকোশলীর অফিস।
এসব কর্মচারীদের অবহেলার কারণে রেলপথটি হয়ে পড়েছে পুরোপুরি অনিরাপদ। ঝুঁকিপূর্ণ এ রেলপথে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত দুই মাস পাঁচটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। এছাড়াও ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে আটকে থাকছে ট্রেন। হাজারো যাত্রী হচ্ছেন সীমাহীন ভোগান্তির শিকার।
জানা যায়, ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ হয়ে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এই রেলপথে ২১টি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে কালিকাপ্রসাদ, ছয়সূতি, হালিমপুর, বোকাইনগর, নীলগঞ্জ, যশোদলসহ বেশ কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম জনবল সংকটে বছরের পর বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা মালপত্র বুকিং দিতে পারছে না। যাত্রীরাও বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করছে। এতে সরকার প্রতি বছর হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে ভৈরব সহকারী নির্বাহী প্রকোশলী জিষাণ দত্তের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভৈরবের স্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, ‘কিছুটা হলেও দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। তা ছাড়া রেললাইন দেখে রাখার দায়িত্ব সবার।’
কিশোরগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রেল রুটকে আধুনিকীকরণ করতে হলে ব্রিটিশ আমলের এই লাইনকে ডিজিটাল লাইনে পরিণত করতে হবে।’ আর ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের মতো আধুনিক যন্ত্রপাতি বসাতে হবে বলেও মত দেন তিনি।