অবরোধের দশ দিনে নিহত ২৩
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ
অবরোধ-কেন্দ্রিক সহিংসতায় সারাদেশে যে ২৩ জন নিহত হয়েছে - এদের মধ্যে ১৮ জনই সাধারণ মানুষ।বিরোধীদল বিএনপির ডাকা লাগাতার অবরোধের সময় সহিংসতায় মোট নিহতের সংথ্যা ২৩-এ পৌঁছেছে।ঢাকার বাইরে গাজীপুরে হরতালের সময় একটি বাসে আগুন দেয়া হলে তার ভেতরে ঘুমন্ত চালকের সহকারী তোফাজ্জল হোসেন পুড়ে মারা যান।
এ ছাড়া ৬ দিন আগে পেট্রোল বোমার আগুনে দগ্ধ আরো এক গাড়িচালক হাসপাতালে মারা গেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী জোটের ডাকে গত দশদিন ধরে অবরোধ চলছে, আর আজ এর পাশাপাশি হরতালও ডাকা হয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদে এই হরতাল ডাকা হয়।
রাজধানী ঢাকায় হরতালের দিনেও প্রচুর বাস অটোরিকশা এবং রিকশা চলাচল করেছে। তুলনায় প্রাইভেট কারের সংখ্যা কম থাকলেও সাম্প্রতিক অন্যন্য হরতালের তুলনায় বেশি ছিল বলেই মনে হয়েছে।
হরতালে রাজধানীতে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও চোখে পড়েনি।
বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া বলছিলেন, “অগণিত অস্ত্রধারী পুলিশ নামিয়েছে সরকার, তাই যে কোন মুহুর্তে জীবন চলে যেতে পারে সে জন্য সবাই সন্ত্রস্ত। প্রাণের ভয় সবারই আছে, তাই যেভাবে দেখা যাবার কথা সেভাবে প্রকাশ্যে কর্মীদের দেখা যাচ্ছে না।”
রাজশাহী থেকে স্থানীয় সাংবাদিক আনোয়ার আলি জানাচ্ছেন, হরতালের সময় দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বিএনপির তেমন কোন উপস্থিতি বা মিছিল চোখে পড়ে নি।
চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার হরতালের সময় রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক লতিফা আনসারী লুনা।
রাজধানী ঢাকায় রাস্তার ওপর অনেক দোকানপাটই খোলা ছিল। দোকানীরা বলেছেন, হরতালে সহিংসতা বা ভাঙচুরের ভয় উপেক্ষা করেই তারা জীবিকার তাড়নায় দোকান খুলেছেন।
শহরের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বা পরীক্ষা হয় নি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একজন নেতা নূহ উল আলম লেনিন বলেন, বিশ্ব ইস্তেমার দ্বিতীয় পর্ব কাল শুরু হচ্ছে । এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকার সহিষ্ণুতা দেখাবে।
তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে অবরোধ-হরতালের মধ্যে যেভাবে যানবাহনে পেট্রোল বোমা হামলা হচ্ছে তা নিয়ে একটা আতঙ্ক- উদ্বেগ কাজ করছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ডা. সামন্ত লাল সেন জানাচ্ছেন, অবরোধ কর্মসূচির সময় অগ্নিদগ্ধ মোট ২২ জন বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়, যার মধ্যে আবুল কালাম সহ মোট তিন জন মারা গেছেন।
তিনি জানান এখনো আরো ১২ জন চিকিৎসাধীন আছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ৪ জনের অবস্থা সংকটজনক।
লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মঙ্গলবার রাতে রংপুরের মিঠাপুকুরে একটি চলন্ত বাসে পেট্রল বোমা ছুঁড়ে মারার ঘটনায় বাসের ভেতরেই পুড়ে মারা যায় এক শিশুসহ মোট পাঁচ জন।
গত ৫ জানুয়ারি ঢাকায় গত নির্বাচনের বর্ষপূতির দিনে সমাবেশ করতে অনুমতি না পেয়ে অবরোধের ডাক দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।