মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর | রাজনীতি » কালীগঞ্জে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত
কালীগঞ্জে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত
তৈয়বুর রহমান (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় ও ইউএনএফপিএ’র আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কালীগঞ্জে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণশুনানি গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা চত্বরে অনুষ্টিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিগণ, জনসাধারন, নারী নেত্রী, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীরা গণশুনানিতে উপস্থিত থেকে বাল্যবিবাহ বন্ধ না হওয়ার কারণ, সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়া ও স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে থানা থেকে কোনো ধরনের প্রতিকার না পাওয়ার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত মহিলা সম্পাদিকা মেহের আফরোজ চুমকি এমপি উপস্থিত হয়ে নারী-পুরুষদের কাছ থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়সমূহ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ও স্বামীর সংসারে স্ত্রীদের নির্যাতনের নানা কারণ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সেই সব বিষয়ে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এমপি নির্দেশ প্রদান করেন।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণশুনানিতে বেশিভাগ বক্তারা বলেন, আদালতের মাধ্যমে নোটারি পাবলিক করে অনেক ছেলেমেয়েরা ও অভিভাবকরা বাল্য বিয়ে দিয়ে থাকেন। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে যেইসব বিয়ে হয়, সেই সব ছেলে-মেয়েদের বয়স থাকে ১৮ বছরের নিচে। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে বন্ধ করতে না পারলে, বাল্যবিয়ে বন্ধ হবে না। তা না হলে সরকারের উদ্যোগ বাল্যবিয়ে বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এছাড়া সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রকৃত চিকিৎসা সেবা জনসাধারণ পাচ্ছে না বলে অনেক ভুক্তভোগীরা গণশুনানিতে উপস্থিত হয়ে এমপির কাছে নালিশ করেন। পাশাপাশি স্বামীর হাতে স্ত্রী নির্যাতন হয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন এবং স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো উপকার পাচ্ছে না এমন অভিযোগও করেন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী।
নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের কথা শোনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ২৪ ঘন্টার মধ্যে নির্যাতিতার পাশে থেকে আইনি যথাযথ কাজ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।
গণশুনানির শেষে স্থানীয় সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থেকে যারা দায়িত্ব পালন করেন, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। আপনারা সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভুলে একটি পরিবার যদি ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হয়, যদি তাদের সংসার ভেঙ্গে যায়। তবে সেই সব জনগণের কাছে আমাদের সকলের জবাবদিহিতা করতে হবে। যার যেই দায়িত্ব আছে তাকে যথাযথভাবে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। নারীদের সংগঠনগুলোকে আরো শক্তিশালী করা হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করে যাবো।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম কিবরিয়া, যুগ্ম সচিব এম এ কামাল বিল্লাহ, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু বকর চৌধুরী প্রমুখ।