বিএনপি অনড় , হার্ডলাইনে সরকারি বাহিনী
পক্ষকাল প্রতিবেদক : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট তাদের সাত দফা দাবিতে অনড় , যেকোন মূল্যে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে একটি নির্বাচনের দাবিতে তাদের আন্দোলন আরো কঠোর থেকে কঠোর করার ঘোষনা দিয়ে আসছে জোটটি। জোটের নেতৃবৃন্দ প্রতিদিনই অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়ে আসছে এবং তাদের আন্দোলন আরো বেগবান করে দাবি আদায় করতে তারা দৃড় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ।
এদিকে ২০ দলীয় জোটের সাত দফা দাবিতে চলমান অবরোধ-হরতালে সকল প্রকার আন্দোলন, নাশকতা ও সহিংসতা দমাতে কঠোর হুঁশিয়ারী দিয়েছে র্যাব, বিজিবি এবং পুলিশের সমন্নয়ে গড়া যৌথবাহিনী। যৌথ বাহিনী তাদের এ হুঁশিয়ারী গত ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের কিছু পর থেকে দিয়ে আসলেও সেই সময়ে যোথবাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের ব্যাপক অভিযান এবং ধর-পাকড় করলেও মাঝখানে কয়েক মাস কিছুটা শিথিল ছিল অভিযান।
তবে বর্তমানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ এবং এর পাশাপাশি হরতালকে কেন্দ্র করে যে কোন ধরনের নাশকতা-সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর পদেক্ষেপ নিয়ে মাঠে নেমেছে র্যাব, পুলিশ এবং বিজিবির সমন্নয়ে গড়া যোথবাহিনী। অবরোধে সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এখন থেকে বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে গঠিত যৌথ বাহিনী।
এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান। জামায়াত-শিবির প্রভাবিত ১৫টি জেলায় প্রাথমিকভাবে অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। দু-একদিনের মধ্যে এ অভিযান আরও জোরদার হবে। প্রয়োজনে দেশের অন্যান্য এলাকায় নামবে যৌথ বাহিনী। পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হামলাকারীদের যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তারা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায় থেকে কঠোর নির্দেশনার পর মাঠ প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে।
পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তাদের প্রতিহত করা হবে। তিনি বলেছেন, ভূল বিএনপি করেছে, আর খেসারত জনগণ দেবে তা হবে না। ৫ই জানুয়ারিতে বিএনপি’র সমাবেশ ডাকা ষড়যন্ত্রের একটি অংশ উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, দেশব্যাপী অরাজকতা আর সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বিএনপি। পরপর দু’বার প্রধানমন্ত্রী হয়েও বিএনপি নেত্রী আইনকে অবজ্ঞা করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহম্মেদ বলেছেন, সিভিল প্রশাসন যতোদিন চাইবে বিজিবি ততোদিন দায়িত্ব পালন করে যাবে। কোথাও যদি বিজিবি হামলা কিংবা নাশকতার শিকার হয় তাহলে প্রয়োজনে বিজিবি অস্ত্র ব্যবহার করবে। এছাড়া আর অন্য কোনো পথ নেই। বিজিবি মহাপরিচালক বলেছেন, পেট্রোল হাতে যখন কাউকে পাওয়া যাবে প্রয়োজনে তাকে গুলি করবে বিজিবি। কারণ একজন মানুষকে গুলি করলে যদি পাঁচজনের জীবন বাঁচেতাহলে সেটা করাই যুক্তিযুক্ত।
এছাড়া র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জনগণ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্যায় যুদ্ধ ঘোষণা করেছে কিছু মানুষ। তাদেরকে বলছি, যুদ্ধ মানে ক্যাজুয়ালিটি। আসো জীবন হাতে নিয়ে আসো। আমাদের যা করা দরকার তাই করবো। বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী তাদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধার করার জন্য দেশ, সমাজ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করেছে। তারা উন্নয়নবাধাগ্রস্ত করছে। দেয়ার আর টেরোরিস্ট।
পুলিশের আইজি শহীদুল হক এবং র্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ এবং বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহম্মেদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে জোটটি বলেছে, তারা রীতিমতো রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। বিরোধী দল ও জনগণকে কঠোর ভাষায় হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।