রবিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » চরভদ্রাসনে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে কিশোর-কিশোরীর
চরভদ্রাসনে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে কিশোর-কিশোরীর
ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিশোর কিশোরীরা দিন দিন পর্নো গ্রাফীতে আসক্তি হয়ে পড়ছে বলে । স্কুল পড়–য়া কিশোররা উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের মোবাইলে গান লোডের দোকান থেকে মোবাইল ফোনে ভরে নিচ্ছে পর্নো ছবি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বন্ধু বান্ধব মিলে মজা করে দেখছে নগ্ন ছবি। আবার দামী মোবাইল সেটে ইন্টারনেট চালু করে ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করছে পর্নো ছবি। এতে দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে উদিয়মান তরুন-তরুনীরা।
উপজেলার বেশীরভাগ পরিবারেরই কেউ না কেউ বিদেশে থাকায় পরিবারের অন্য সদস্যদের হাতে অর্থের প্রবাহ থাকায় প্রবাসিরা বিদেশ থেকে তাদের স্বজনদের জন্য অত্যাধুনিক মোবাইল সেট পাঠিয়ে দিচ্ছেন। স্কুল কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইলে অবাধে ঢুকিয়ে নিচ্ছে পর্নো ভিডিও সহ পর্নোগ্রাফী। মোবাইল ফোনের মেমোরীকার্ডে গান ভরার পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীরা হাতে তুলে নিচ্ছে পর্নো ছবি। এসব নগ্ন ছবি দেখে নষ্ট হচ্ছে কিশোর-কিশোরীর চরিত্র। ফলে প্রায়ই তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপকর্মে।
চরভদ্রাসন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আনোয়ার আলী মোল্যা বলেন, পর্ণোগ্রাফি রোধে আমার স্কুলের সব ছাত্র-ছাত্রীকে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উপজেলার অন্য ১৬টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এ বিধি নিষেধ প্রয়োগ করলে অন্তত শিক্ষার্থীরা পর্নো ছবির কবল থেকে রক্ষা পাবে বলেও মনে করেন তিনি।
উপজেলার বিশ্বাস বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কাউয়ূম মাষ্টার বলেন, উপজেলার শিক্ষার্থীদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে দ্রুত বিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
একটি সূত্র জানায়, উপজেলা সদর বাজার, মৌলভীরচর বাজার, জাকেরের সুরা বাজার, চরহাজীগঞ্জ বাজার, চরঅযোধ্যা বাজার, আমিন খার হাট, আঃ হাইখানের হাট সহ গ্রাম গঞ্জের আনাচে কানাচে কম্পিউটার দোকান থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে পর্নো ছবি।
স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ী জানায়, এক জিবি মোবাইল মেমোরী কার্ড লোড করতে ৩০ টাকা ও দুই জিবি লোড করতে গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৪০ টাকা। অধিক ক্রেতা সংগ্রহ করার জন্য গান লোডের সময় এক্স ফিল্ম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্চুক এক কম্পিউটার ব্যবসায়ী জানান, সম্প্রতি উপজেলার কিশোর ও যুবকদের চেয়ে স্কুল কলেজের কিছু ছাত্রী ও বিদেশ প্রবন পরিবারের গৃহবধুরা এসব পর্নো ছবি মোবাইলে নেওয়ার বেশী আগ্রহী দেখা যাচ্ছে। ক্রেতারা তাদের মোবাইলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার নতুন কিছু পর্নো ছবি লোড নিতে আসেন বলেও তিনি জানান।
সায়লা (২৮) নামক এক ক্রেতা জানান, “ আমি উপজেলা সদর বাজারের এক মোবাইল সার্ভিসিং ও গান লোড দোকানে বিভিন্ন ধরনের গান মোবাইলে নিতে আসি। আমার মেমোরী কার্ড বাড়ী নিয়ে দেখি প্রায় অর্ধ জিবি মেমোরী পর্নো ছবি আমাকে না জানিয়েই লোড দেওয়া হয়েছে। পরের দিন দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় ওঁইসব ছবি ভূলে চলে গেছে”। তিনি আরও জানান, একই কৌশলে প্রতিটি কিশোরী ও মহিলা কাষ্টমারকে তাদের অজান্তে পর্নো ছবি মোবাইলে ঢুকিয়ে দেয়া হয় পরবর্তিতে আকৃষ্ট করার জন্য। আর এসব গান লোডের ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নজর এড়াতে তাদের নিজস্ব কম্পিউটারে সরাসরি পর্নো ছবি না রেখে আলাদা পেন ড্রাইভ বা সিডিতে নিষিদ্ধ ছবিগুলো রেখে সময়মত ক্রেতাদের সরবরাহ করছে বলেও জানাগেছে।