শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Daily Pokkhokal
রবিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | জেলার খবর » কুলচাষে বেকার ছাত্রের সাফল্য
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | জেলার খবর » কুলচাষে বেকার ছাত্রের সাফল্য
৩৮১ বার পঠিত
রবিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কুলচাষে বেকার ছাত্রের সাফল্য

---
শফিউল আলম দুলাল পাবনা
লেখাপড়ার পাশাপাশি কুল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য এসেছে বেকার ভূমিহীন এক  কলেজ ছাত্রের। সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, পাবনা জেলার সুজানগড় উপজেলার হেমরাজপুর গ্রামের স্কুল ছাত্র ভূমিহীন মো. আবুল কালাম আজাদ ২০০৬ সালে সবজি চাষ শুরু করে। পিতার পাঁচ শতক বাড়ীর জায়গা ছাড়া কোন আবাদী জমি ছিল না। লেখা-পড়ার খরচ যোগার ও সংসারে কিছুটা আয় উন্নতির আশায় বাৎসরিক লীজ ভিত্তিতে পাঁচ বিঘা জমি নিয়ে আজাদ সবজি চাষ শুরু করে। কিন্তু সেটাতে পরিকল্পনা ও পরামর্শের অভাবে সে লাভবান না হয়ে লোকসানের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। ফলে সবজি চাষ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। কিছু ঋন গ্রস্থ হয়ে পড়ে সে। এরই মধ্যে আজাদ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সাফল্যবান ও সরকারী পুরষ্কার প্রাপ্ত ফল চাষীদের বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ নিতে থাকে।  সন্ধান পায় টেবুনিয়া হর্টিকালচার সেন্টারের। সেখানে গিয়ে আজাদ তদানিন্তন উদ্যানতত্ত্ববিদ মো. আজহার আলীর সাথে পরামর্শ করে। অতীতের সবজি চাষে লোকসানের কথাও ব্যাক্ত করে। কৃষিবিদ আজহার তাকে কুল চাষ করার জন্য পরামর্শদেন। সে সাথে কুল চাষে লাভের একটি পরিসংখ্যান দেন। পরামর্শ মোতাবেক টেবুনিয়া হর্টিকালচারের সমন্বিত মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আজাদ প্রশিক্ষন গ্রহন করে ২০১৩ সাল থেকে কুলচাষ শুরু করে। পুনরায় সে ঝুকি নিয়ে পাঁচ বিঘা জমি লীজ নিয়ে আপেল কুল আবাদ করে। এ বছরে সে কুল বিক্রি করে প্রায় একলক্ষ টাকা লাভ করে।
সরেজমিনে পরিদর্শন কালে আজাদ জানায়, গত বছরে সে বাগান সম্প্রসারন করে আট বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছিল। প্রতি বিঘা জমিতে একশ’৫৫টি কুল গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ষাট কেজি আপেল কুল উত্তোলন করছে। প্রতিকেজি কুল ৯০ থেকে১০০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করছে। বাছাই ছোট সাইজের কুল বিক্রি করছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। ঢাকা থেকে পাইকারগন বাগানে এসে কুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীগনও বাগান থেকে কুল নিয়ে যাচ্ছে। এতে চলতি বছর খরচ বাদে বিঘা প্রতি দেড় লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়েছে। এতে আট বিঘা জমি থেকে আজাদ বার লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেছে বলে জানিয়েছে। সংসারের সচ্ছলতা ছাড়াও নিজের ও ভাইবোনদের লেখা পড়া চালানোর পরেও বাড়ীর জন্য আরো দশ শতক জমি খরিদ করতে পেরেছে। বর্তমানে আজাদ দুবলিয়া হাজী জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কুল চাষে তার সাফল্য দেখে তার কলেজ বন্ধু হাবিবুল বাশার টুটুলও টেবুনিয়া হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে গত বছর থেকে কুল চাষ শুরু করেছে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম কুড়িপাড়াতেও শুরু হয়েছে কুল চাষ। সবাই অনুসরন করছে সাফল্যবান আজাদের।
লীজকৃত জমি, ফলে বছরে একটি ফসলের পরিবর্তে মিশ্র ফসল করে আরো লাভবান হওয়ার কোন উপায় আছেকিনা, সে বিষয়ে আজাদ বর্তমান টেবুনিয়া হর্টিকালচারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজহার আলীর সরনাপন্ন হয়। উপ-পরিচালক আজাহার আলী আজাদকে কুলের সাথে পেয়ারার মিশ্র বাগান করার পরামর্শদেন। সে মোতাবেক টেবুনিয়া হর্টিকালচার সেন্টার থেকে থাই পেয়ারার চারা সরবরাহ করা হয়। উপ-পরিচালক জনাব আজাহার আজাদকে কুল ও পেয়ারার মিশ্র বাগান প্রদর্শনী স্থাপনের সার্বিক সাহায্য ও মাঠ পর্যায়ে সরেজমিনে  প্রযূক্তিগত সহায়তা প্রদান করছেন। সামনের পেয়ারা মৌসুমে আরো অর্থনৈতিক সাফল্য আসবে বলে আজাদ আশা প্রকাশ করেছে।



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)