মুচলেকায় জামিন পেলেন ড. ইউনূস
পক্ষকাল সংবাদ-
গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দিয়েছেন আদালত। শ্রম আইনের ১০টি নিয়ম লঙ্ঘন করার মামলায় আজ রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলামের আদালতে জামিন আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলাম ড. ইউনূসসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলা আমলে নিয়ে সমন জারি করা হয়। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি শ্রম আইনের ১০টি নিয়ম লঙ্ঘন করায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তরিকুল ইসলাম। মামলার বিবাদীরা হলেন, গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরিচালক আ. হাই খান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গৌরি শংকর। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর গ্রামীণ কমিউনিকেশনসে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে প্রতিষ্ঠানটির দ্বারা ১০টি বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি দেখতে পান।
এর আগেও গত ৩০ এপ্রিল বাদীপক্ষের এক পরিদর্শক প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে ত্রুটিগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেন। এরপর ৭ মে ডাকযোগে এ বিষয়ে বিবাদী পক্ষ জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক হয়নি। পরে ২৮ অক্টোবর বর্তমান পরিদর্শক আবারও তা অবহিত করেন। নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে বিবাদীরা ফের সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের সময় অনুযায়ী তারা জবাব দাখিল করেননি।
এমতাবস্থায় বিবাদীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ ধারা ৩৩ (ঙ) এবং ৩০৭ মোতাবেক দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বাদী মনে করেন।
যে ১০টি বিধি লঙ্ঘন করেছে ড. ইউনূসের কোম্পানি
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর গত ১০/১০/২০১৯ খ্রি. তারিখে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) আইন ২০১৩ ও বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর নিম্নোক্ত ১০টি লঙ্ঘন পরিলক্ষিত হয়। ড. ইউনূসের কোম্পানি এগুলো লঙ্ঘন করেছে-
১. বিধি মোতাবেক শ্রমিক/কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বহি প্রদান করা হয়নি।
২. বিধি মোতাবেক শ্রমিকের কাজের সময় এর নোটিশ পরিদর্শকের নিকট হতে অনুমোদিত নয়।
৩. কোম্পানিটি বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক রিটার্ন দাখিল করেনি।
৪. কর্মীদের বৎসরান্তে অর্জিত ছুটির অর্ধেক নগদায়ন করা হয় না।
৫. কোম্পানির নিয়োগবিধি মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়।
৬. ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ও উৎসব ছুটি প্রদান-সংক্রান্ত কোনো রেকর্ড/রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হয় না।
৭. কোম্পানির মুনাফার অংশ ৫% শ্রমিকের অংশগ্রহণ তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ বণ্টন করা হয় না।
৮. সেফ্টি কমিটি গঠন করা হয়নি।
৯. কর্মীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করালেও কোনো ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ করেননি।
১০. কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করেনি।