ভোট গ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
পক্ষকাল সংবাদ-
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গ্রহণ শেষে এখন চলছে ভোট গণনার কাজ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেয়া শুরু হয়। নিকট অতীতের মধ্যে সবচেয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচারণা শেষে এবার জনরায়ের পালা। কিন্তু সকাল থেকেই নানা সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, অনিয়ম, এজেন্টদের উপর হামলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ভোটের কার্জক্রম। প্রথমবারে মত রাজধানীবাসী ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে নগর পিতা ও কাউন্সিলর নির্বাচিত করার সুযোগ পেয়েছে।
এদিকে আজ সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম। ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। সকাল ৮ টায় রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নেই ভোটার, নেই কোন ভোটারের লাইনও। অলস সময় কাটাচ্ছেন নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এরপর ঢাকা কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গভমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল, আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন কমিউনিটি সেন্টার, শিশু একাডেমীসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে এমন চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে। এসময় ভোটারদের সুবিধার্থে কেন্দ্রের ভেতরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেয়ার নিয়মাবলী সম্বলিত ফেস্টুনও সাঁটানো দেখা যায়।
এর আগে সকালে নিজের ভোট দিতে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) বিএনপির মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, ‘কোনো বাধাই আমাকে আটকাতে পারবে না। আমি আজকে আল্লাহর নাম নিয়ে এবং আমার বাবাকে স্মরণ করে বাসা থেকে বের হয়েছি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তত আছি। আজকে যদি আমাকে হামলার শিকার হতে হয়, আহত হতে হয়, হব। তবুও ভোটকেন্দ্র দখলমুক্ত এবং ভোটারদের নিরাপদভাবে ভোট দেয়ার জন্য যা যা করা দরকার তা আমি করব।’ এদিকে একই এলাকার আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ভোট দিতে এসে আওয়ামী লীগের বিপুল ব্যবধানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট ছিলাম। অনেকবার হার জিত এসেছে। আমি মনে করি জনগণ নৌকায় ভোট দেবে। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করবো আধুনিক, সুস্থ সুন্দর ঢাকা গড়ার জন্য।’ কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে স্বস্তি না থাকায় ভোটাররা সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে আসছে না, তাই ভোটারদের উপস্থিতি কম। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা নিরাপত্তার ব্যাপারে স্বস্তি পাচ্ছে না তাই ভোট দিতে আসছে না। আর ইভিএমের মাধ্যমে অনেক স্লো প্রসেস এ ভোট দিতে হচ্ছে।’ ভোটারদের উদ্দেশে এই মেয়র প্রার্থী আরও বলেন, ‘মাঠে আছি ভোট চলবে চারটা পর্যন্ত। আপনারা ভয় না পেয়ে নিজের ভোট নিজে দিতে আসেন।’
উল্লেখ্য, ঢাকার দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্র ও ১৪ হাজার ৪৩৪টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্র ও ৭ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষ এবং দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র ও ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে।
দুই সিটিতে ভোটার ৫৪ লাখের বেশি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ভোটার ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪। এর মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ এবং নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।
২০১৫ সালে ঢাকা উত্তরে ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন এবং ঢাকা দক্ষিণে ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৩ ভোটার ছিল।