রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এখনও সম্পূর্ণরূপে সফলতা অর্জন করতে পারিনি’
‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এখনও সম্পূর্ণরূপে সফলতা অর্জন করতে পারিনি’
পক্ষকাল সংবাদ-
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, প্রতিটি জনগণের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের একটি খাদ্যের অধিকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু দেশের জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এখনও আমরা সম্পূর্ণরূপে সফলতা অর্জন করতে পারিনি।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্য উৎপাদন হতে শুরু করে খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন ধাপে খাদ্যদ্রব্য অনিরাপদ হচ্ছে। মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে জীবনের শক্তি অর্জন ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য। কিন্তু ভেজাল ও ক্ষতিকর খাদ্য মানুষের জীবন শক্তি কেড়ে নিচ্ছে।
বর্তমান সরকারের সফলতা তুলে ধরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতীয় সংসদে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ পাস হয়, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষটি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে এবং সারাদেশে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের বিষয়টি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগেও যেখানে খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিনের উপস্থিতি ব্যাপক হারে পাওয়া যাচ্ছিল, সেখানে বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন নেই বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের। তার দেখানো রাস্তা ধরেই তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আমরা ইতিমধ্যেই পূরণ করতে পেরেছি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আসুন আজ মুজিববর্ষে আমরা সবাই অনিরাপদ খাদ্যমুক্ত বাংলাদেশের অঙ্গীকার করি। সবাই একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সমাজের সকল স্তরের জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করি। আমরা শপথ নেই ভেজাল নিজে দেব না, ভেজাল খাবো না, ভেজাল দিতে দেব না। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরবর্তী প্রজন্মকে এর হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, পুষ্টিসম্মত নিরাপদ খাদ্য আমাদের সু-স্বাস্থ্যের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নিয়ামক। এজন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে।
তিনি বলেন, অধিক মুনাফার আশায় খাদ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অপরিচ্ছন্ন কর্মচারী দিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাদ্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এগুলো আমাদের পরিহার করতে হবে।
দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। দেশব্যাপী জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২০ উদযাপন করা হচ্ছে।
খাদ্য সচিব ড. নাজমানারা খানুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহবুবুর কবীর, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য কর্তৃপক্ষ, খাদ্য অধিদপ্তর এবং খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সর্বসাধারণকে অবহিত করণ এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ, বিপণন ও বিক্রয় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বিষয়ে সর্বস্তরে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।