যে কারণে নামকরণ করোনাভাইরাস
পক্ষকাল সংবাদ-
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জর্জরিত চীন। আতঙ্কে আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আজ বুধবার পর্যন্ত চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৯০ জন। সংক্রমিত হয়েছে আরো প্রায় ২৪ হাজার মানুষ। চীনের বাইরে ফিলিপাইন ও হংকংয়ে এই ভাইরাসে একজন করে মারা গেছে।
ভাইরাসটির বৈজ্ঞানিক নাম ২০১৯-এনসিওভি। অথচ এটিকে সবাই করোনাভাইরাস হিসেবেই চেনে। এর নামকরণের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ঘটনা।
জানা গেছে, বছরের শুরুতে গুগলে করোনা বিয়ার ভাইরাস লিখে সার্চ দেয়া বেড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে মানুষের ধারণা হয়েছিল, মেক্সিকান জনপ্রিয় পানীয় ‘করোনা এক্সট্রা বিয়ার’ থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে। যার কারণেই ভাইরাসটির নাম করোনাভাইরাস রাখা হয়।
গুগলের হিসাবে দেখা যায়, গত ১৮ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত গুগলে ‘করোনা বিয়ার ভাইরাস’ লিখে খোঁজার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ২ হাজার ৩০০ শতাংশ। ‘বিয়ার ভাইরাস’ লিখে খোঁজ বেড়ে যায় ৭৪৪ শতাংশ। আর ‘বিয়ার করোনাভাইরাস’ লিখে খুঁজছিল ৩ হাজার ২৩৩ শতাংশ মানুষ।
একটি পানীয় নিয়ে জনমনে ভীতি তৈরি হওয়ায় ওই বিয়ার কোম্পানি থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
করোনা একটি ল্যাতিন শব্দ, আর করোনা বিয়ার মেক্সকোতেই উৎপাদিত হয়। যার কারণে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
করোনা শব্দটি ল্যাটিন শব্দে এসেছে গ্রাচীন গ্রিক শব্দ করোন থেকে। করোন অর্থ পুষ্পমাল্য বা পুষ্পমুকুট। এ ছাড়া জ্যোতির্শাস্ত্রেও করোনা শব্দের ব্যবহার আছে। সূর্যের চারপাশে উজ্জ্বল যে আলোর বলয় তৈরি হয় (বিশেষ করে গ্রহণের সময় দেখা যায়) তা মুকুটের মতো দেখা যায় বলে জ্যোতির্বিদরা একে করোনা বলেন।
আবার ড্যাফোডিল ফুলেও পাপড়ির বেস্টনের মাঝে যে অংশটি ট্রাম্পেটের মতো বেরিয়ে থাকে, সেটাকেও উদ্ভিদবিজ্ঞানে করোনা বলে।
২০১৯-এনসিওভি ভাইরাসটি যখন ইলেকট্রন অনুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা হয় তখন ভাইরাসটির মূল দেহ ঘিরে ট্রাম্পেট বা ফানেলের মতো অসংখ্য কাঁটা দেখা যায়। যা দেখতে মুকুটের মতোই লাগে। যার কারণে এ ভাইরাসের নামকরণ করা হয়েছে করোনাভাইরাস।
১৯৩০ সালে প্রথম এ ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এর পর ষাটের দশকে প্রথম করোনাভাইরাস মানবদেহে পাওয়া যায়।