কারাগারে খালেদার দুই বছর
পক্ষকাল সংবাদ-
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে তিনি। প্রথম ১৩ মাস ছিলেন পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে। সেখানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত বছরের ১ এপ্রিল চিকিসার জন্য খালেদাকে নিয়ে আসা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।তারপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত দুই বছর ধরেই বেগম জিয়ার জামিন ও মুক্তির জন্য লড়ে যাচ্ছেন তার আইনজীবীরা। তাদের অভিযোগ সরকার আদালতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। দলীয় নেতাকর্মীরাও বেগম জিয়ার কারাবাস মেনে নিতে পারছেন না। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন বেগম জিয়াকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্ত করে আনা সম্ভব নয়। তাই বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
বিএনপি নেত্রীর অন্যতম আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়া মুক্তিও পাবেন না, জামিনও পাবেন না। সেটা এরইমধ্যে প্রমাণও হয়ে গেছে। রাজপথে আন্দোলন ছাড়া তাকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেবলমাত্র এক ব্যক্তির প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রীর বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী। তার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সে পথেই হাঁটছি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথের আন্দোলনের বিকল্প নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির জন্য আন্দোলনকেই বেছে নেয়ার কথা একাধিকবার বলেও গত দুই বছরে কার্যকরী কোন আন্দলোন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপি।
এদিকে, খালেদা জিয়ার কারাবাসের দুই বছর উপলক্ষে শনিবার দুপুর দুইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও সারা দেশে জেলা সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি। এ সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও এদিন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো পোস্টার ও লিফলেট প্রকাশ করবে।
এর আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা, নাইকো মামলা, গ্যাটকো মামলা ও বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতির মামলাসহ মোট ৩৬টি মামলা রয়েছে।
২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলাগুলো দায়ের হয়েছিলো। সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের এই মামলাগুলোর মধ্যে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় এরইমধ্যে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হলেও আপিলে তা বেড়ে ১০ বছর হয়েছে। অপরদিকে ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড হয় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর। তার দুর্নীতির বাকি তিনটি মামলা এখনও বিচারাধীন।