গাইবান্ধায় শীতে ২ শিশুর মৃত্যু
আকতার বানু লাকি, গাইবান্ধা : শৈত্যপ্রবাহ আর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে জেলায় শীতের তীব্রতায় কাবু হয়ে পড়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে শিশুরা। শীতজনিত রোগে ইতোমধ্যে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৬ জানুয়ারি সদর উপজেলার কিশামত মালিবাড়ি গ্রামের শাহ আলমের ১১ মাসের শিশুসন্তান সাব্বির মারা গেছে। এর দুই দিন পর ১৮ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আমিনুল মিয়ার ১৮ মাসের শিশুসন্তান সিফাত আলীর মৃত্যু হয়।
সূত্র জানায়, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে বর্তমানে ২৯ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়া জেলার ছয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমপক্ষে ২০ জন শিশু একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. এসএমএ জলিল দৈনিক পক্ষকালকে জানান, শীতজনিত রোগে ইতোমধ্যে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোতে গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলার সাতটি উপজেলার ১২০টি চরাঞ্চল ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত ছিন্নমুল ও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন। এ সব শ্রমজীবী ও ভাসমান মানুষদের কনকনে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম করতে দেখা গেছে।
শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষেরা দুর্ভোগ পোহালেও জেলায় চাহিদার তুলনায় শীতবস্ত্র বিতরণ অপ্রতুল্য। তবে জেলার সদর উপজেলাসহ ছয় উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
জেলার ভারপ্রাপ্ত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম দ্দৈনিক পক্ষকালকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রাপ্ত এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৭১০টি কম্বল, ১ হাজার চাদর, ২ হাজার ২৫০ সোয়েটার ও ৬৫০টি মাফলার ছয় উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এহছানে এলাহী দৈনিক পক্ষকালকে জানান, সরকারিভাবেপ্রাপ্ত কম্বলগুলো পাওয়ার সঙ্গেই বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া আরও শীতবস্ত্র চেয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।