মায়া চৌধুরীর ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ
পক্ষকাল ডেস্ক সংবাদঃবুধবার ১৭ই মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন দীপু চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদপুরের আদালতে অস্ত্র আইনের ধারা উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্তি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসানের আদালতে মতলব উত্তরের মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বাদী হয়ে এই অভিযোগটি দায়ের করেন। এতে দীপু চৌধুরী ছাড়াও আরও ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তপূর্বক আলামত উদ্ধার করে প্রতিবেদন জমা দিতে মতলব উত্তর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাদী তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার তিনি। আসামিরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী, হিংস্র প্রকৃতির, নারায়ণগঞ্জ সাত খুনের মাস্টার মাইন্ড, দুর্ধর্ষ, বেপরোয়া, অত্যাচারী, মানুষের জানমালের এবং শান্তির জন্য হুমকি স্বরূপ। বাদী পক্ষের পর্যটন কেন্দ্রটি জোরপূর্বক, বেআইনিভাবে দখলে নেওয়ার জন্য ঘটনার পূর্ব হতেই বাদী পক্ষকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছেন। ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ১২ ফেব্রুয়ারি আসামিরা অর্ধশত সন্ত্রাসীসহ বেআইনি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শর্টগান, বন্দুক, পিস্তল, রিভলবার ইত্যাদিসহ অতকির্তভাবে পর্যটন কেন্দ্রের সামনে হাজির হয়।
এসময় পর্যটন কেন্দ্রের মালিক এবং ১/২/৩নং সাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২নং সাক্ষীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মামলার ১নং আসামি গুলি ছোড়েন। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গুলির শব্দ শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিগণ গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এই অভিযোগের অন্য আসামিরা হলেন- জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী মুক্তার হোসেন, অপু চৌধুরী, আহার খালাশী, ফতেপুর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী, কলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান সোবহান সরকার সুভা, শাহীন চৌধুরী, সম্রাট গাজী, আজাদ খালাশী, জেলা পরিষদের সদস্য মিনহাজ উদ্দিন খান, ছাত্রলীগ নেতা তামজিদ সরকার রিয়াদ, লিখন সরকার, খোরশেদ চৌধুরী, হোসেন মেম্বার, মেহেদী হাসান কাজল, কুদ্দুস, মামুন শিকদার, আক্তার সরকার, ইউসুফ ও সুমন বেপারী।
এদিকে বুধবার রাতে মতলব উত্তর থানার ওসি শাহজাহান কামাল জানান, অভিযোগ নিয়ে আদালতের নির্দেশনা এখনও তার হাতে পৌঁছেনি। তা হাতে পাওয়া মাত্র তদন্ত কার্যক্রম শুরু হবে। তবে ওসি আরও জানান, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র থেকে ছয়টি গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে। সেখানে গুলির ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্তে অবশ্য বেরিয়ে আসবে। অন্যদিকে এই ঘটনায় পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী মিজান নামে একব্যক্তি মোহনপুরে মেঘনা নদীরপাড় ঘেঁষে বিশাল এলাকাজুড়ে একটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন। যার পাশেই আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার গ্রামের বাড়ি। এই নিয়ে গত দুই বছর ধরে মায়া পরিবারের সঙ্গে কাজী মিজানের বিরোধ চলছে। তাছাড়া বর্তমানে মতলবের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল আমিন রুহুলের সঙ্গে মায়া চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। অথচ এক সময় তাদের দুজনের মধ্যে পরম বন্ধুত্ব ছিল। আর কাজী মিজানের পক্ষেও কাজ করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য।
সুত্র-পক্ষকাল সংবাদডেস্ক /সময় টিভি সংবাদ