ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ
পক্ষকাল ডেস্ক-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলওয়ে স্টেশনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৬ মার্চ) বিকেলে রেলওয়ে স্টেশনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায় মাদ্রাসা ছাত্ররা। এরপর থেকে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শোয়েব আহমেদ বলেন, বিকেলে কয়েকশ মাদ্রাসা ছাত্র স্টেশনে এসে হামলা চালান। এ সময় তারা প্যানেল টিকিট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ড ও যাত্রীদের চেয়ার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এতে করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মাদ্রাসা ছাত্ররা রেললাইনে অবস্থান করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৬ মার্চ) জুমার নামাজের পর ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে ওঠে বিভীষিকার নগরী। পুরো শহরে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
হামলাকারীরা সরকারি-বেসরকারি অফিস, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, স্বাধীনতার নানা স্থাপত্য, পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ পুড়িয়ে দেয় রেলস্টেশনও। রেললাইন উপড়ে আগুন দেওয়া হয়। ফলে বিকেল চারটা থেকে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষুব্ধরা পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, স্কয়ারসংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, পৌর মার্কেট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকায় টানানো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ছিঁড়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয় বঙ্গবন্ধুর ছবিও। তবে পুরো সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নীরব থাকতে দেখা যায়।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ঝটিকা হামলা চালায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টা পর্যন্ত থানা ঘেরাও করে রাখে তারা। এ সময় থানা সংলগ্ন দুটি সেতুতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভও করা হয়। হামলায় পুলিশের অন্তত ২০ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। এছাড়া ছবি তুলতে গিয়ে মারধরের শিকার হন সংবাদকর্মীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মাদ্রাসাছাত্ররা মিছিল করে বিভিন্নস্থানে ভাঙচুর করেছে। এটিকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা কার্যক্রম চালিয়েছি। শহরের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।