ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে নিহত ৫
পক্ষকাল ডেস্ক -
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে মাদ্রাসার ছাত্ররা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা থেকে সুহিলপুর ইউনিয়নের উত্তর সুহিলপুর কবরস্থান পর্যন্ত মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে। পরে তারা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সেসময় টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও এক পর্যায়ে গুলিও ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন তারা।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে জুর আলম (৩৫), বাদল মিয়া (৪০) বাছির মিয়া (২৮), সাদেক মিয়া (৩৫), রুহুল আমীন (৩৫) ও সুজন মিয়াসহ (২২) কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন জুর আলম, বাদল মিয়া ও সুজন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রাত পৌনে নয়টার দিকে আরও দুই গুলিবিদ্ধের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তিনি। তারা হলেন কাওসার মিয়া (২৪) ও জুবায়ের (১৪)।
চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই ওই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়।’
এদের মধ্যে নিহত জুর আলমের বাড়ি সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের হারিয়া গ্রামে। তিনি হারিয়া গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে।
বাদল মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলায় দিরাই উপজেলায়। তিনি বিসিকে শ্রমিকের কাজ করতেন। সুজন মিয়ার বাড়ি সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামে। কাওসার ও জুবায়েরর বাড়ি সদর থানায়।
আহতদের মধ্যে বাছির মিয়ার বাড়ি বুধল ইউনিয়নের জঙ্গলীসার, সাদেক মিয়ার বাড়ি সুহিলপুর ইউনিয়নের কলামুড়ি ও রুহুল আমিনের বাড়ি বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামে।
নিহত জুর আলমের স্বজন সুমন মিয়া বলেন, ‘রাস্তায় অবরোধের সময় গুলিতে জুর আলম মারা যান।’
এ ব্যাপারে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিন ফোন রিসিভি করেননি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিমও ফোন ধরেননি।
পরে চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন এন্ড ক্রাইম) মো. জাকির হোসেন খান পিপিএম-কে ফোন দেওয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে বিকেল ৪টা থেকে শহরের টি.এ. রোডে মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় ঘনঘন ককটেল বিষ্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। পরে বিজিবির সদস্যরা টি.এ. রোডে অবস্থান নেয়।
সংবাদ-রাইজিংবিডি.কম