প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর, নতুন মোড় নিতে পারে রাজনীতি
রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী ৫ই সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ওই সফরটি নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নিতে পারে। পেশাদার কূটনীতিকদের মতে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বোঝাপড়া, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি, যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে জ্বালানি সহ নিত্যপণ্যের সরবরাহে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট এবং বাংলাদেশ ও ভারতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সফরটিতে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন মর্মে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ওই বক্তব্য দেয়ার একদিন পর ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এক অনুষ্ঠানে বলেন, ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে এ দুটি বক্তব্যও আলোচিত হচ্ছে কূটনৈতিক অঙ্গনে। সরকার প্রধানের সফরের এডভান্স টিম এরইমধ্যে দিল্লি ঘুরে এসেছে।
সেগুনবাগিচার পররাষ্ট্র ভবন এবং রমনার রাষ্ট্রাচার প্রধানের দপ্তরে প্রায় প্রতিদিনই সফরের খুঁটিনাটি নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ওই সফর প্রস্তুতিতে যেন কোনো ঘাটতি না হয় এ জন্য নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য মতে, প্রায় ৩ বছর বিরতির পর পূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী ভারতে যাচ্ছেন।
কাক্সিক্ষত ওই সফরে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দুই বন্ধু রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যকার মুখোমুখি বৈঠক হবে। সেখানে নিশ্চিতভাবে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কথা হবে। বিশেষ করে রাজনৈতিক সম্পর্কের ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নিরসনের চেষ্টা হবে। অর্থনৈতিক এবং সামরিক খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। এছাড়া বাংলাদেশের আগামী দিনের নেতৃত্ব নিয়ে ঢাকায় যে জল্পনা-কল্পনা চলছে তা আলোচনায় থাকলেও থাকতে পারে।
ঢাকার কর্মকর্তারা হাই প্রোফাইল ওই সফরের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় এ নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ। তাদের মতে, সফরের আলোচ্যসূচিতে প্রতিনিয়ত সংযোজন-বিয়োজন ঘটছে। শেষ সময়ে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং হবে। দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে যেসব আলোচনা হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেও বহুল প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের আশা কম জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, এ চুক্তিটি দ্রুত সইয়ে বরাবরের মতো তাগিদ দিবেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রস্তুতির মুহূর্তে বাংলাদেশে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র স্বপ্রণোদিত সফর, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের যোগাযোগে আচমকা তৎপরতা বেড়ে যাওয়া তথা বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে দিল্লির ডেটলাইনে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে ঢাকার সঙ্গে দিল্লির প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতির কথাও জানাচ্ছে দিল্লির সংবাদ মাধ্যম। কিন্তু ঢাকার প্রতিনিধিরা এ নিয়ে এখনো খোলাসা করে কিছু বলেননি। অবশ্য তারা এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন নি। দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস অনলাইন একদিন আগেই জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি বিষয় বোঝাপড়া হবে। দুই দেশের মধ্যকার প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। বলা হয়েছে- ওই চুক্তির খসড়া ইতিমধ্যে প্রস্তুত এবং বিনিময় হয়েছে। সরকার প্রধানের আসন্ন সফরে বঙ্গোপসাগরের সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যৌথ উৎপাদনের বিষয়টি পাকাপোক্ত করবে ঢাকা ও নয়াদিল্লি।
ওই রিপোর্টে এটাও বলা হয়, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বাড়ার প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সুদৃঢ় করার আলোচনায় জোর দিয়েছে। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছিল জানিয়ে ওই রিপোর্টে বলা হয়, আগামী ৫ থেকে ৮ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা আপগ্রেড করা হবে এবং দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রস্তাবিত চুক্তিটি সই হতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফরে মহাকাশ গবেষণা, সাইবার নিরাপত্তা, সুনীল অর্থনীতি এবং পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে পারস্পরিক সহযোগিতা গভীর করার আলোচনা হয়েছিল। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের রিপোর্টে বলা হয়, ক’বছর ধরে ঢাকার কাছে সামরিক সরঞ্জামাদি বিক্রি নিয়ে আলোচনা করছে নয়াদিল্লি।
কিন্তু এর সংবেদনশীলতা অনুধাবন করে সেই প্রস্তাবে পরিবর্তন এনেছে ভারত। ওই বিশ্লেষকের মতে, এখন এটি একটি ভালো উদ্যোগ হতে পারে যদি নয়াদিল্লি ঢাকার প্রয়োজন বিবেচনায় সামরিক হার্ডওয়্যার বা সরঞ্জামাদির যৌথ উৎপাদনে সম্মত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা সংলাপে ওই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডের ঢাকা সফরে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, তাই ভারতীয় সেনাপ্রধান তার সঙ্গে দেখা করেছেন। বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃত্বের আসন্ন দিল্লি সফরে দুই বিশ্বস্ত প্রতিবেশীর পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের দিকে তাকিয়ে দিল্লি: এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর বাস্তবায়নে ভারতের তৎপরতা নিয়ে দিল্লি ডেটলাইনে ঢাকায় প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, আগামী বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে এটিই হবে শেখ হাসিনার শেষ ভারত সফর। সঙ্গত কারণে এই সফরের দিকে উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে রয়েছে দিল্লি। এই সফরকে ফলপ্রসূ করে তুলতে ভারত ও বাংলাদেশ; দুইপক্ষেই কূটনৈতিক তৎপরতা রয়েছে তুঙ্গে। সফরের নানা লজিস্টিক্যাল খুঁটিনাটি এই মুহূর্তে চূড়ান্ত করছেন তারা। শেখ হাসিনা এই সফরে দিল্লিতে পা রাখবেন ৫ই সেপ্টেম্বর (সোমবার)। সেদিন অবশ্য কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থাকছে না, তবে চাণক্যপুরীর বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে তিনি সেদিন ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন বলে কথা রয়েছে। ভারতে বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছেন। ২০১৭ সালের মার্চে তার দিল্লি সফরে শেখ হাসিনা উঠেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রণব মুখার্জি; যাকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সৌহার্দ্যরে সুবাদে শেখ হাসিনা ডাকতেন ‘কাকাবাবু’ বলে। সেবার ‘কাকাবাবু’র আতিথ্য গ্রহণ করলেও ২০১৯ সালের অক্টোবরে তিনি কিন্তু দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলেই থেকেছিলেন। আসন্ন সফরে তার ঠিকানা হবে সর্দার প্যাটেল রোডের সেই অভিজাত হোটেলটিতে। ৬ই সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) হলো শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের মূল ‘বিজনেস ডে’ বা আসল কার্যদিবস। সেদিন সকালে রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ ও রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের মধ্যদিয়ে তার আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনার শেষে শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলো।
প্রতিনিধিদল পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকও (সামিট বা শীর্ষ সম্মেলন) সেদিনই অনুষ্ঠিত হবে। দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দিনভর সেসব বৈঠকের শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। ভারতে সিআইআই বা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের মতো প্রধান বণিক সভাগুলোর প্ল্যাটফরমে শেখ হাসিনা পরের দিন সকালে ভাষণ দেবেন। ভারতের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কীভাবে উভয়পক্ষই উপকৃত হতে পারে, সেই চিত্রই সেখানে তুলে ধরবেন তিনি। বুধবার বিকালেই তিনি পাড়ি দেবেন রাজস্থানের পবিত্র আজমীর শরীফ দরগায়। সফরের একেবারে শেষ পর্বে এই মাজার জিয়ারত করেই তিনি রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের বিমানবন্দর থেকেই বৃহস্পতিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
তিস্তায় না, ‘সেপা’য় হ্যাঁ: দিল্লির একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে- আসন্ন সফরে বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি দিনের আলো দেখছে না, এটা স্পষ্ট। দুই পক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারাই একান্ত আলোচনায় স্বীকার করেছেন, তিস্তা চুক্তির জট এই সফরেই খুলে যাবে- এতটা আশা করা উচিত হবে না। তাই বলে সফরের অর্জন কম হবে- এটা ভাবারও কোনো কারণ নেই। দিল্লির এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রিপোর্টে বলা হয়, ‘মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের আগে এটাই শেষবারের মতো তার ভারতে আসা। ফলে ভারত শেখ হাসিনাকে কিছুতেই খালি হাতে ফেরাতে পারবে না। আর পরিস্থিতি যদি সেরকমই হতো, তাহলে কিন্তু এই সফরটাই হতো না। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার এবারের সফরে দু’দেশের মধ্যে ‘সেপা’ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নামক বাণিজ্য চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজে এই চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। এখন শুধু এ বিষয়ে ভারতের রাজি হওয়ার অপেক্ষা। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শত শত পণ্যের অবাধ ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের জন্য এটিকে একটি ‘ল্যান্ডমার্ক’ বা যুগান্তকারী সমঝোতা বলে গণ্য করা হচ্ছে।
এ ছাড়া শেখ হাসিনার সফরের ঠিক আগেই একযুগেরও বেশি সময় পর দিল্লিতে বসছে দু’দেশের জয়েন্ট রিভার্স কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক। দুই দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি বা পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জেআরসি যে বিষয়গুলোতে একমত হবে, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় সেটাই সমঝোতার আকারে পূর্ণতা পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজধানীতে এসে তার সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তা নিয়েও এই মুহূর্তে জল্পনা তুঙ্গে। শেখ হাসিনা নিজে যে চাইছেন দিল্লিতে তার সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির দেখা হোক, তা অবশ্য পরিষ্কার। গত মাসেই তিনি সরাসরি মমতা ব্যানার্জিকে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছেন, আমি দিল্লিতে আসছি, আপনিও সেখানে আসুন। এই প্রস্তাবে প্রচ্ছন্ন সায় ছিল দিল্লিরও।
শেখ হাসিনা এই ‘আমন্ত্রণ’ জানানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও পশ্চিমবঙ্গকে বার্তা পাঠানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় দিল্লিতে আসেন তা খুবই ইতিবাচক একটা সংকেত দেবে। তিস্তার মতো যেসব অমীমাংসিত বিষয় মমতা ব্যানার্জির বাধায় আটকে আছে বলে ধারণা করা হয়, সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সরাসরি ও খোলামেলা কথাবার্তা হোক, এটা আসলে দিল্লিও চাইছে। মমতা ব্যানার্জি হয়তো দিল্লিতে নিশ্চিতভাবেই আসতেন, কিন্তু ইতিমধ্যে সিবিআই বা ইডি’র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো রাজ্যে তার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যে লাগাতার অভিযান শুরু করেছে, তাতেই বিষয়টা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পার্থ চ্যাটার্জি বা অনুব্রত মণ্ডলের মতো তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা এখন গ্রেপ্তার হয়ে জেলে। আর মমতা ব্যানার্জির দল এটাকে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতা’ বলেই দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের স্বার্থে মমতা ব্যানার্জি আদৌ সে সময় দিল্লি আসবেন কিনা, সেটাও বিরাট প্রশ্ন।
উৎসঃ mzamin