শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

Daily Pokkhokal
বুধবার, ২৪ আগস্ট ২০২২
প্রথম পাতা » জেলার খবর » জাতীয় ‘মিথ্যাচারের জন্য’ মোংলা বন্দর চেয়ারম্যানের অপসারণ চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা
প্রথম পাতা » জেলার খবর » জাতীয় ‘মিথ্যাচারের জন্য’ মোংলা বন্দর চেয়ারম্যানের অপসারণ চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা
৪৬৫ বার পঠিত
বুধবার, ২৪ আগস্ট ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

জাতীয় ‘মিথ্যাচারের জন্য’ মোংলা বন্দর চেয়ারম্যানের অপসারণ চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা

---
খুলনার দাকোপ উপজেলার পশুর নদের পারের বাণীশান্তা ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস কৃষি। তবে মোংলা বন্দর চ্যানেলের গভীরতা বাড়ানোর জন্য পশুর নদ খনন করে বালু ফেলতে তাঁদের সেই আবাদি জমি হুকুমদখল করা হয়েছে। এতে জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় এলাকার মানুষ তাঁদের জমিতে মাটি ফেলতে দিতে রাজি নন। কিন্তু মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মিথ্যাচার করে সরকারকে ভুল বুঝিয়ে যাচ্ছেন। তিনি শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তাই তাঁর অপসারণ দাবি করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
খুলনার বাণীশান্তায় তিন ফসলি উর্বর কৃষিজমিতে বালুমাটি ফেলার ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা থেকে এ দাবি তোলা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাক, নিজেরা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলন শুধু বাণীশান্তার এলাকার বাসিন্দাদের নয়, জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। কিন্তু মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা যেসব কথা বলেছেন, সেটা মিথ্যাচার। একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে দায়িত্বে থেকে মিথ্যা বলা চরম অসদাচরণ। তিনি তাঁর পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এই অসদাচরণের অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হতে পারেন।
সুলতানা কামাল মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেন।
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, বাণীশান্তা এলাকায় ৯৫ শতাংশ বাসিন্দা সনাতন ধর্মাবলম্বী। এ কারণে ওই এলাকায় তিন ফসলি জমিতে পশুর নদ খননের বালু ফেলার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমি অনাবাদি বলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মিথ্যাচার করেছেন। জমির মালিকদের তিনি বহিরাগত বলে উল্লেখ করেছেন। বাণীশান্তার কৃষকদের তিনি ষড়যন্ত্রকারী বলছেন। একজন সরকারি কর্মচারীকে এই ঔদ্ধত্য দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে?
নাগরিক সভায় মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
নাগরিক সভায় মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
মূল প্রবন্ধে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, খুলনার জেলা প্রশাসন গণশুনানি করলে বাণীশান্তার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তাঁদের তিন ফসলি কৃষি জমি দখল না করার পক্ষে মতামত জানান। তাঁদের সব অভিযোগ ও মতামত উপেক্ষা করে বাণীশান্তার ৩০০ একর জমি হুকুমদখলের প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে বিকল্প জায়গায় বালু ফেলার প্রস্তাব করা হলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তে এখনো অটল।
অনুষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিকল্প স্থানে বালু ফেলার দাবি জানান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান।
বাণীশান্তার কয়েকজন বাসিন্দা তাঁদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন। সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘অন্তত ১ হাজার ২০০ পরিবার এসব জমি বর্গাচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এটা তাদের জীবন ও জীবিকা রক্ষার লড়াই। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষের লোকজন বিদ্রূপ করে বলছেন, আমরা নাকি সরকার বিরোধিতা করছি।’ হীরনময় রায় বলেন, ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে আমাদের বহিরাগত করে দিয়েছেন। এরপর বলবেন উদ্বাস্তু। আমাদের উদ্বাস্তু করার জন্যই কি এই ব্যবস্থা?’
নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উৎসঃ প্রথমআলো



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)