বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
প্রথম পাতা » » বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা না বলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আলোচনা অর্থহীন’
বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা না বলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আলোচনা অর্থহীন’
ওয়াশিংটনে রাইট টু ফ্রিডমের আলোচনা
‘বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা না বলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আলোচনা অর্থহীন’
১৮ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবা
দেশের বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে কথা না বলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলা অর্থহীন। মুক্ত সমাজে সমালোচনা করাটাই সাংবাদিকদের কাজ, সাংবাদিকদের কলম বন্ধ করা সরকারের কাজ নয়। বুধবার ওয়াশিংটন ভিত্তিক অধিকার সংগঠন ‘রাইট টু ফ্রিডম’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উক্ত আলোচনায় নির্ধারিত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এর সিনিয়র প্রোগ্রাম কনসালট্যান্ট এবং সিপিজে’র এশিয়া প্রোগ্রামের সাবেক সমন্বয়কারী স্টিভেন বাটলার। তিনি বলেন, অনেকেই বলেন- গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ এবং মৌলিক। যুক্তরাষ্ট্রেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা হামলার শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশের জন্যেতো এটা সত্যই।
প্রথম আলো সম্পাদক সহ বিভিন্ন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা এবং হামলার কথা উল্লেখ করে স্টিভেন বলেন, মুক্ত সমাজে সমালোচনা করাটাই সাংবাদিকদের কাজ, তাদের কলম বন্ধ করাটা সরকারের কাজ নয়। সরকারের সমালোচনা করা গণমাধ্যমের জন্য ভালো পরিবেশ এবং গণতন্ত্রের উপস্থিতিকেই নির্দেশ করে। এটা নিয়ে বরং গর্ব করা উচিত। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাকে হয়রানির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে প্রথম আলো সরকারের আক্রমণের সুনির্দিষ্ট টার্গেটে পরিণত হয়েছে।
আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে জেলে নেওয়ার পর প্রচন্ড আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তাকে আর জেলে না নেয়া হলেও হয়রানি বন্ধ নেই। যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামির ভাইয়ের ওপর ঢাকায় সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার মতো অন্যান্য ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং সুইডেনের গথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং রিসার্চার আলী রীয়াজ বলেন, সরকার প্রণীত নতুন আইনগুলো নিয়ে এই পরিবেশে নির্বাচন হলে শুধু গণমাধ্যমই নয়, সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে।
বিজ্ঞাপন
এখন যে যৎসামান্য কথা বলার সুযোগ আছে, তাও থাকবে না। এই সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, যদি তারা ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করে ফেলতে পারে তাহলে এই সিস্টেমকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কিছু থাকবে বলে আমি মনে করি না। বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে কথা না বলে অন্য সবকিছু নিয়ে কথা বলা অর্থহীন।
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে বলেন, লাখো মানুষ গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার স্প্রিরিট নিয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু, প্রতি বছর বিপ্লবের দেখা মেলে না। তিনি বলেন, এমনকি আইনপ্রণেতাদের অনেকে রাষ্ট্র, সরকার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য বুঝেন না। রুলিং এলিটদের মধ্যে শিক্ষার অভাব অনেক সমস্যার জন্ম দেয়।
রাইট টু ফ্রিডম এর প্রেসিডেন্ট, অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম বি মাইলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী।