শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

Daily Pokkhokal
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ » পাকিস্তানেও একাধিকবার নিষিদ্ধ হয়েছিল জামায়াত
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ » পাকিস্তানেও একাধিকবার নিষিদ্ধ হয়েছিল জামায়াত
৪ বার পঠিত
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাকিস্তানেও একাধিকবার নিষিদ্ধ হয়েছিল জামায়াত

                                                                                                                                                                                                                               ---

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :  অখণ্ড ভারতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠা হলেও যে পাকিস্তানকে ভিত্তি করে এই দলটি সংগঠিত হয়েছিল, সেই দেশেও  নিষিদ্ধ হয়েছিল ইসলামী দলটি।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পাকিস্তানে অন্তত দুই বার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। দলটির প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদীর মৃত্যুদণ্ডও হয়েছিল আদালতের রায়, যদিও তাকে সেই শাস্তি ভোগ করতে হয়নি।বাংলাদেশেও স্বাধীনতার পর নিষিদ্ধ হয়েছিল জামায়াত। তবে পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর দলটি আবার সক্রিয় হয়। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী দল হিসাবে জামায়াতের বিচারের দাবি উঠলেও সেই বিচারের প্রক্রিয়া এখনও ঝুলে আছে।

এর মধ্যেই সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতার পর নতুন করে দলটি নিষিদ্ধের বিষয়টি উঠেছে আলোচনায়।এই আন্দোলনের মধ্যে সরকারি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা-আগুন দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জামায়াত ও বিএনপিকে দায়ী করার পর সোমবার ১৪ দলের এক বৈঠকে জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে জোটের মতৈক্য হওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী অবশ্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় তাদের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করে আসছে।জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠা ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট। মওদুদীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দলটির নাম তখন ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ।মওদুদীর জন্ম বর্তমান ভারতের মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদ শহরে। তার পড়াশোনার শুরু মাদ্রাসায়। কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছিলেন তিনি। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা বেশি দূর না এগোলেও ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ ছিল তার।

দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি ভারত ভাগের পর পাকিস্তানে গিয়ে জামায়াতের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে থাকেন মওদুদী। ইসলামী ভাবাদর্শে দল গঠনকারী মওদুদী ধর্ম নিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের কুফল হিসাবে দেখতেন।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যে ইসলামী সংবিধান ও ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠার আওয়াজ তুলে ১৯৪৮ সালে গ্রেপ্তার হন মওদুদী। কিন্তু ১৯৪৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যুর পর ১৯৪৯ সালে মওদুদী মুক্তি পান এবং রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন তিনি।

এরপর মওদুদীর নেতৃত্বে আহমদিয়াদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণার দাবি ওঠে। তা কেন্দ্র করে লাহোরে দাঙ্গা বাধে। তাতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ২ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায়।

সেই ঘটনায় সামরিক আদালতে মওদুদীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। কিন্তু সে রায় আর কার্যকর হয়নি। প্রথমে মৃত্যুদণ্ডের সাজা লঘু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল, পরে দণ্ড মওকুফ করে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক হিসেবে আইয়ুব খান ক্ষমতা নেওয়ার পর সব ধর্মীয় রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেন। তাতে জামায়াতও নিষিদ্ধ হয়েছিল।

আইয়ুব খানের আমলে প্রণীত মুসলিম পারিবারিক আইনের বিরোধিতা করে পরিস্থিতি নাজুক করার চেষ্টা চালালে ১৯৬৪ সালে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়। পাকিস্তানের দৈনিক ডনের সূত্রে জানা যায়, তখন নির্বাহী আদেেশ ‘বেআইনি সংগঠন’ হিসাবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

নিষিদ্ধের আদেশে বলা হয়েছিল, জামায়াত ও দলটির নেতারা রাষ্ট্রীয় সংহতি ও ঐক্য বিনষ্টের কাজে সক্রিয় ছিেলন। রাষ্ট্রের শত্রুদের কাছ থেকে দলটির অর্থ নেওয়ার প্রমাণও রয়েছে। ১৯৬৪ সালে আইয়ুব খানের সরকার মওদুদীকে আবার কারাগারে পাঠালেও পরে মুক্তিও দেওয়া হয় তাকে। মওদুদী ৭৫ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে যৃুক্তরাষ্ট্রে মারা যান।

পাকিস্তানে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসাবে এখনও সক্রিয় আছে। তবে তাদের প্রভাব দিন দিনই কমছে। এই বছরের শুরুতে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৪৩টিতে প্রার্থী দিলেও একটি আসনেও জিততে পারেনি দলটি। একাত্তরে বাংলাদেেশর স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় জামায়াত। শুধু তাই নয়, বাঙালি হত্যাযজ্ঞে পাকিস্তানিদের সহায়তার ভূমিকাও নিয়েছিল দলটি। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জামায়াতের প্রত্যক্ষ ভূমিকার বিষয়টিও আলোচিত। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার ধর্মীয় সব দল নিষিদ্ধ করলে জামায়াতও সেই কাতারে পরে নিষিদ্ধ হয়। তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের যে উল্টোযাত্রা শুরু হয়, তাতে পুনর্বাসিত হয় জামায়াত।

জিয়াউর রহমানের আমলে জামায়াত সক্রিয় ওঠার পর এইচ এম এরশাদের আমলে দলটি সংসদেও আসন নেয়। এরপর ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রীও করা হয় দলটির দুই নেতাকে, তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়াকে একাত্তরের লাখো শহীদের প্রতি ‘চপেটাঘাত’ বলে পরে মন্তব্য এসেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলার এক রায়ে। ওই দুজন পরে যুদ্ধাপরাধে দোষি সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসিতে ঝুলেছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষনেতা গোলাম আযম পাকিস্তান থেকে এরশাদ আমলে ফিরলেও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠনের পর আমিরের দায়িত্ব নেন।

তার প্রতিবাদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে উঠলে সেখান থেকে জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি জোরাল হয়ে ওঠে।
২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন থেকে জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি ফের জোরাল হয়ে ওঠে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নিলে একে একে ধরা পড়েন জামায়াতের শীর্ষনেতারা। বিচারে মৃত্যুদণ্ড হয় দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদসহ কয়েকজন শীর্ষনেতার। গোলাম আযম ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাভোগের মধ্যে মারা যান। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে গড়ে ওঠা শাহবাগ আন্দোলন থেকে জামায়াত এবং দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের দাবি আবার জোরেশোরে ওঠে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও তা সেই দাবি পূরণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কোনও লক্ষণ এতদিন দেখা যায়নি। যুদ্ধাপরােধর বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক রায়ে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল দল’ বলা হলেও দল হিসাবে বিচারের এখতিয়ার এই আদালতের নেই।

সেজন্য আইন সংশোধন করে শুধু ব্যক্তি নয়, দলের যুদ্ধাপরাধের বিচারের পথ করার দাবিও উঠেছিল শাহবাগ আন্দোলন থেকে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিভিন্ন সময়ে একথা বললেও তা ঝুলে আছে প্রায় দশক ধরে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর আগে বিভিন্ন সময়ে বলেছিলেন, জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে এ বিষয়ে কিছু করবে না। নিষিদ্ধ না হলেও সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে জামায়াত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারিয়েছে ২০১৩ সালেই। ফলে দলীয়ভাবে তারা কোনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। ১৯৮৬ সালের পর থেকে প্রায় প্রতিটি সংসদে জামায়াত ছিল। ২০০৮ সালের সংসদে দুটি আসনে জিতেছিল তারা। এরপর আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি



এ পাতার আরও খবর

জামায়াতে ইসলামী ক্রিমিনাল দল জামায়াতে ইসলামী ক্রিমিনাল দল
খুন-রগকাটা-অগ্নিসংযোগ-ধ্বংসযজ্ঞের আরেক নাম জামায়াত-শিবির খুন-রগকাটা-অগ্নিসংযোগ-ধ্বংসযজ্ঞের আরেক নাম জামায়াত-শিবির
বরগুনার ধর্ষক বলে কি বরগুনার ধর্ষক বলে কি
সাংবাদিকেরা  বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুর্নীতিবাজ  মাহবুব মোর্শেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করলেন সাংবাদিকেরা বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুর্নীতিবাজ মাহবুব মোর্শেদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করলেন
ভারতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ইউনূস সরকারের, নেপথ্যে কোন অঙ্ক? ভারতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ইউনূস সরকারের, নেপথ্যে কোন অঙ্ক?
পল্লবীতে নারী সাংবাদিককে  সংঘবদ্ধ ধর্ষণের   শিকার গ্রেপ্তার  ২ পল্লবীতে নারী সাংবাদিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গ্রেপ্তার ২
“” “”"দুদক’র দৃষ্টি আকর্ষণ”"” কর ফাঁকিবাজ আবাসন ব্যবসায়ী বহুরূপী সাহেব আলী কি আইনের উর্ধ্বে?
সিলেটের ভয়ংকর দানব দুই সহোদর দুর্নীতিবাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও এমপিদের হাজার কোটি টাকা পাচারকারী লন্ডনের রফিকুল ও সিরাজুল  বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিলেটের ভয়ংকর দানব দুই সহোদর দুর্নীতিবাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও এমপিদের হাজার কোটি টাকা পাচারকারী লন্ডনের রফিকুল ও সিরাজুল বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বিআই ডব্লিউটিএ’রআওয়ামী দোসর দুর্নীতি মহা দুর্নীতিবাজ কবির  হোসেন এখন নব্য জাতীয়তাবাদি বিআই ডব্লিউটিএ’রআওয়ামী দোসর দুর্নীতি মহা দুর্নীতিবাজ কবির হোসেন এখন নব্য জাতীয়তাবাদি

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)