যৌতুকের জন্য স্ত্রীর চোখ উপড়ে ফেললেন পাষণ্ড স্বামী !
পক্ষকাল প্রতিবেদক : যৌতুকের পুরো টাকা পরিশোধ না করায় স্ত্রীর দুই চোখ উপরে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ ঘটনায় দক্ষিণখান থানা পুলিশ ওই পাষণ্ড স্বামী বিদ্যুৎ মিনারকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে।
গত সোমবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় সানজিদা আক্তারের চোখ উপরে ফেলেন তার স্বামী। পরে প্রতিবেশীরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করেন। যৌতুকের দাবিতে বিদ্যুৎ মিনা তার স্ত্রী সানজিদা আক্তারের চোখ উপড়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ করে আহতের ভাই শহীদুল ইসলাম।
তিনি জানান, অটোরিকশা চালক বিদ্যুৎ মিনারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ মিনার তার স্ত্রী ও দুই সন্তান অনিক (৮) ও জ্যোতি (৬)-কে নিয়ে দক্ষিণ পাড়ার ১১/১ নম্বর বাসায় দুটো ঘর নিয়ে বসবাস করতেন। সানজিদা কাজ করতেন ওই এলাকার নিপা গার্মেন্টসে।
তিনি আরো বলেন, মাদারীপুরের শিবচর থানার বদরসুন গ্রামের সানজিদার সঙ্গে ১০ বছর আগে একই এলাকার উরুর চরের সিরাজ মিনার ছেলে বিদ্যুৎ মিনার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বিদ্যুৎ মিনারকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল জানিয়ে শহীদুল বলেন, ছয় মাস আগে অটোরিকশা কেনার জন্য ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বাকি ৮০ হাজার টাকার জন্য বিদ্যুৎ মিনার প্রায়ই সানজিদাকে মারধর করতেন।
সানজিদার প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত সোমবার দুপুরে সানজিদাকে বাসার দরজায় তালা দিয়ে তার স্বামীকে হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে যেতে দেখে। পরে সন্দেহবশত দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে সানজিদাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। সে সময় সানজিদার হাত-পা খাটের সঙ্গে বাঁধা এবং মুখে গামছা ঢোকানো ছিল। তার গাল বেয়ে রক্ত পড়ছিল। এরপর প্রতিবেশীরা সানজিদাকে উদ্ধার করে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিদ্যুৎ মিনার সেখানে গিয়ে সানজিদাকে চিকিৎসা ছাড়াই বাসায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পুলিশ বিদ্যুৎ মিনারকে গ্রেফতার করলে সানজিদাকে তার পরিবার চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে সানজিদার এক দফা অস্ত্রোপচার হয়েছে। দৃষ্টিশক্তি হারানোর শঙ্কায় আছেন তিনি।
সানজিদার ভাই শহীদুলের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, মামলার পর বিদ্যুৎ মিনারকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। আদালতে নিয়ে বুধবার তার রিমান্ডের আবেদন করা হবে।