মঙ্গলবার, ২৭ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » সন্ত্রাস মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সন্ত্রাস মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
পক্ষকাল প্রতিবেদক: দেশে চলমান বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস মোকাবেলায় দল-মত নির্বিশেষে দেশের সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গত এক বছরে দেশ যখন শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে চলছিলো, বিশ্বের মাঝে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো তখন কোনও কারণ ছাড়াই বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য কাজ করে যাচ্ছে।
জাতীয় পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এদের হাত থেকে দুই বছরের শিশুটি পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না। স্বজন হারানোর আহাজারি আজ দেশের আকাশে বাতাসে। এদের সন্ত্রাসী তৎপরতা রুখে দিতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবরোধের নামে বোমাবাজির কারণে মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমায় আগত লক্ষ লক্ষ মুসল্লিকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামের নামে বিএনপি-জামায়াত রাজনীতি করে আবার ইসলামকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। মহানবী (সঃ) এর জন্ম ও ওফাতের পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীর দিনেও তারা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি দেওয়ার ধৃষ্ঠতা দেখায়।
এদের কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে বলেও মত দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে, ভারতীয় নেতার মিথ্যা টেলিফোনের খবর প্রচার করে এরা সারা দুনিয়ার সামনে দেশের ভাবমূর্তি পদদলিত করেছে।
২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে তারা চরম সহিংসতা চালিয়েছিল। শত শত গাড়িতে আগুন দিয়েছিল। ভাংচুর করেছিল হাজার হাজার গাড়ি। হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছিল, স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সেসময়েও তাদের সহিংস হামলা, পেট্রোল বোমা, অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলায় নিহত হয়েছে শত শত নিরীহ মানুষ। সরকারি অফিস, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফুটপাতের দোকান এমনকি নিরীহ পশুও তাদের জিঘাংসার হাত থেকে রেহাই পায়নি, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশের ১৭ সদস্যসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৩০ জন সদস্য সেসময় প্রাণ হারান, তাদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য সর্বোচ্চ দেশপ্রেম নিয়ে তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। দেশের শান্তি শৃক্সক্ষলা ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখবেন। সরকার সবসময়ই তাদের পাশে থাকবে বলেও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, পুলিশের প্রতিটি সদস্য দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পেশাদারিত্বের সাথে জননিরাপত্তায় কাজ করে যাবে। পুলিশ হবে জনগণের বন্ধু। অসহায়ের শেষ আশ্রয়স্থল, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিশ্বায়নের এ যুগে পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বাড়ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের কাজের ক্ষেত্র আজ বিস্তৃত হয়েছে সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার, পণ্য চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার প্রতিরোধে তাদের ভূমিকা রাখতে হচ্ছে। পাশাপাশি, জলজ ও বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও পুলিশকে দায়িত্ব নিদে হচ্ছে।
এসব বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পুলিশকে জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের মহান পেশাকে আপনারা নিজ গুণে সমুন্নত রাখবেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সকল উন্নয়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে আমরা ব্যয় নয়, বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করি। একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ দেশ গড়ার লক্ষে পুলিশের কৌশলগত পরিকল্পনা, অবকাঠামো ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা এবং পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধি করার কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। .
পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করতে আরও ৫০ হাজার পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন, প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির যে ধারা সূচনা হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।
সকলে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতির পিতার ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ পুলিশের উত্তরোত্তর সাফল্য এবং সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৫ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।