আত্রাই নদীতে অপরিকল্পিত রাবারড্যাম
চাটমোহর প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহরসহ বৃহত্তম চলনবিলের নদীগুলোতে এখন পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদী গুলোতে নাব্যতা হারিয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে। নদীর তলদেশে চাষাবাদ হচ্ছে ধানসহ অন্যান্য ফসলাদি। চলনবিলের বড়াল, গুমানী, রতœাই, করতোয়া, নন্দকুজা, আত্রাইনদীসহ প্রায় ১৬টি নদী নাব্যতা হারিয়ে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে বোরো আবাদে সেচ ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, চলনবিলে গুরুদাসপুর উপজেলার সাবগাড়ি নামক স্থানে আত্রাই নদীতে অপরিকল্পিত রাবারড্যাম স্থাপন করে পানি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। পানি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে চলনবিল অঞ্চলের কৃষি জমিতে প্রয়োজনীয় সেচসহ প্রায় ৫০ হাজার টিউবওয়েলে পানি সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলার সাবগাড়ি নামক স্থানে আত্রাই নদীতে রাবারড্যাম স্থাপন করায় সিংড়ায় নদী ও খাল বিলে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষিত থাকলেও ভাটি এলাকা আত্রাই, গুমানী, বড়াল ও নন্দকুজাসহ খুবজীপুর নদী, তুলসিগঙ্গা নদী, গুড়নদী এবং বানগঙ্গা নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সমস্ত কৃষি স্কিমে চালিত অসংখ্য গভীর ও অগভীর নলকুপে প্রয়োজনীয় পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে।
ফলে এলাকার কৃষকরা প্রতিটি স্কিমেই ৭/৮ হাত মাটি গর্ত করে সেখানে শ্যালো মেশিন বসিয়ে জমিতে কোনো মতে সেচের ব্যবস্থা করেছেন। তবে দুই সপ্তাহের মধ্যে পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেলে পানি সংকটের অভাবে সেচ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। উৎপাদন সংকটের সম্মুখীন হতে পারে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
পাশাপাশি আবাসিক এলাকায় স্থাপিত গভীর ও অগভীর নলকুপে পানির অভাবে পানীয় জলের সংকট তীব্র আকার ধারন করতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে। এব্যাপারে গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এবারের কৃষি মৌসুমে উপজেলা এলাকায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই কৃষি জমিগুলোতে ১১৬টি বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকুপ, ৫টি বিদ্যুৎ চালিত এলএলপি গভীর নলকুপ, ৯০৩টি বিদ্যুৎ চালিত অগভীর নলকুপ এবং ৩৯১০টি ডিজেল চালিত অগভীর নলকুপের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু চৈত্র মাসে পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেলে পানি সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।