এসএসসি পরীক্ষা পেছালো
পক্ষকাল প্রতিবেদক: হরতালের কারণে এসএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষা পেছাল। সোমবারের পরীক্ষা শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।সচিবালয়ে রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ তথ্য জানান। অন্য পরীক্ষাগুলো পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে রবিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডাকে বিএনপি জোট। এ পরিস্থিতিতে সারা দেশের ১৪ লাখ ৭৯ হাজার পরীক্ষার্থীসহ, অভিভাবক, শিক্ষকরা উৎকণ্ঠায় পড়ে যান। এ পরিপ্রেক্ষিতে জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডাকেন শিক্ষামন্ত্রী।
এসএসসিতে সোমবার বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র, সহজ বাংলা প্রথমপত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথমপত্র, দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবীদ এবং কারিগরিতে বাংলা-২ পত্রের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এ পরীক্ষাগুলো এখন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এরমধ্যে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৯ জন ছাত্র এবং ৭ লাখ ১৫ হাজার ৯২৭ জন ছাত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের অমানবিক কর্মকাণ্ড ও হিংস্রতার মুখে ঠেলে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই লেখাপড়া করবে, তবে তাদের নিরাপত্তা ও জীবনও আমাদের কাছে বড়। এ জন্য হরতালের মধ্যে পরীক্ষা পরিবর্তন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, আশাকরি এরপর নতুন করে হরতাল দিয়ে কেউ পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত করবেন না, এরপর অবরোধও থাকবে না। পরীক্ষার তারিখগুলোতে আর হরতাল না দিয়ে দয়া না করলে মানুষ আর তাদের কাছে কি আশা করবে। তারা মানুষের কাছে মুখও বা দেখাবেন কিভাবে।’
এসএসসি পরীক্ষার আগে অবরোধ প্রত্যাহার করার জন্য কিছুদিন ধরে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছিলো। শিক্ষামন্ত্রী এর আগে একাধিকবার আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘পরীক্ষার সময় হরতাল অবরোধ প্রত্যাহার করার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি, সব ভাষা ব্যবহার করে এ বিষয়ে তাদের কাছে আবেদন রেখেছি। মনে করেছি অন্তত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে দয়াবান হয়ে তারা সাড়া দেবেন। কিন্ত তা হয়নি।’
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরীক্ষার সময় নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্ত তাদেরও তো সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এবার ৩ হাজার ১১৬টি কেন্দ্রে ২৭ হাজার ৮০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। বিদেশে আটটি কেন্দ্রের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এবার আটটি বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১১ লাখ ১২ হাজার ৫৯১ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে (কারিগরি) এক লাখ ১০ হাজার ২৯৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে।’
এবার বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ইংরেজি প্রথমপত্র, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র ছাড়া সকল বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হবে। গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা নামে নতুন একটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়টির পরীক্ষাও সৃজনশীল প্রশ্নে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নানাভাবে আমরা শিক্ষাখাতের উন্নতির চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা খুবই মর্মাহত আন্দোলন কর্মসূচির কারণে ক্লাস করতে পারছি না, পরীক্ষা নিতে পারছি না, বই পৌঁছাতে পারছি না। দিনের পর দিন হরতাল-অবরোধ দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে, পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’