আবাসন খাতে কালো টাকা চান গণপূর্তমন্ত্রী
পক্ষকাল প্রতিবেদক : আবাসন খাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসনে। একই সঙ্গে এই খাতে সরকারি প্রণোদনার দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে রিহ্যাব শীতকালীন আবাসন মেলা-২০১৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী আমার মন্ত্রণালয়ে আসবেন। আমি একজন মন্ত্রী হতে পারি কিন্তু আমিও রিহ্যাবের সদস্য। আমি আপনাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব দাবিদাওয়া পেশ করব। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব আবাসন খাতের জন্য স্থগিত হওয়া ১৯ বিবিবি-আইন যেন আবার চালু করা হয়। যেন কোনো গ্রাহক ফ্ল্যাট কিনলে কেউ তার টাকা উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞেস না করে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি আবাসন খাতে এখন আর আগের জৌলুসে নাই। অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। এই খাতে অবশ্যই সরকারি প্রণোদনা দেওয়ার জন্য আমি সরকারকে আহ্বান জানাব। প্রণোদনা না দিলে এই খাত গতিশীল হবে না।’Details…মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এখন থেকে সরকারি ভাবে রাজউকসহ অন্যান্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্লটের প্রকল্প করা হবে না। এখন থেকে সব এ্যাপার্টমেন্টের প্রকল্প নেওয়া হবে। ১৫ বছর আগে আমি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম। তখন আমি ঝিলমিল ও উত্তরা প্রকল্পে প্লটের পাশাপাশি ফ্ল্যাটের পরিকল্পনাও করেছিলাম। কিন্তু ১৫ বছর পর এই মন্ত্রণালয়ে এসে দেখি কোনো এ্যাপার্টমেন্টের কাজই হয়নি। রাজউক নিজেদের রাজকীয় সংস্থা মনে করে। তাই তারা প্লটের ব্যবসাকে মনে করে জমিদারী ব্যবসা। ফ্ল্যাটের ব্যবসায় তাদের আগ্রহ নেই।’
আবাসন খাতে ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামানোর দাবি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে সরকারিভাবে আবাসন খাতে সহায়তা দেওয়া হয়। কোনো দেশেই ব্যাংক ঋণে সুদের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশের উপরে না। কিন্তু আমাদের দেশে সুদের হার অত্যন্ত বেশি। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি জানাব এই বিষয়টিতে যেন নজর দেওয়া হয়।’
রাজধানীর বিস্তর অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) সমালোচনা করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘ড্যাপের কলম এমনভাবে চলছে, যেখানে জমি পাচ্ছে সেটাকেই বন্যাপ্রবণ অঞ্চল বলছে। সবই যদি বন্যাপ্রবণ হয় তাহলে মানুষ বাস করবে কোথায়। যদি কোনো আবাসন প্রকল্পে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই।’
খুলনার বয়রা ও রাজধানীর মিরপুরে বস্তিবাসীর জন্য স্বল্পমূল্যে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হবে এমন তথ্য জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি খুলনার বয়রা ও ঢাকার মিরপুরে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বস্তির নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যবস্থা করছি। এখানে একটি পরিবার প্রতিদিন ২৭৫ টাকা কিস্তির মাধ্যমে ২০ বছর মেয়াদে সাড়ে চারশ’ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারবে।’
আগামীতে সব এ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে ডেভেলপারদের জন্য তাদের প্রকল্পে এসটিপি স্থাপন করা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কারণ ঢাকার খাল ও নদ-নদীগুলোর নষ্ট হচ্ছে স্যুয়ারেজ লাইনের বর্জ্যের জন্য। একই সঙ্গে এ্যাপার্টমেন্টগুলোতে কিছুটা সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা গেলে বিদ্যুতের চাহিদার উপর চাপ কম পড়বে।’
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর সামসুল আল-আমীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।