সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লক্ষীপুরে বোমা নিক্ষেপে আহত ৩, দগ্ধ ১ জনের মৃত্যু
লক্ষীপুরে বোমা নিক্ষেপে আহত ৩, দগ্ধ ১ জনের মৃত্যু
রুবেল হোসেন, লক্ষীপুর প্রতিনিধি: ঢাকা-লক্ষীপুর মহা সড়কের জেলা পুলিশ লাইনস ও জেলা কারাগারের মধ্যবর্তী স্থানে পিকআপ ভ্যানে দুর্বৃত্তদের ককটেল নিক্ষেপে চালক সহ তিন জন গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার রাত সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা সহাকরী পুলিশ সুপার (এসএসপি-সার্কেল) মো. নাসিম মিয়া তিনজন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন- পিকআপ গাড়ির চলাক মো. কামাল হোসেন (৩৫), মোঃ জুয়েল হোসেন (২১) ও মোহাম্মদ মিলন (২০)। আহতদের লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক জেলা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎস্যক ডা: আনোয়ার হোসেন।
পুলিশ ও আহতরা জানান, নোয়াখালী থেকে চাল বোঝাই একটি পিকআপ গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঢ-১৪-৪৮৬৩) লক্ষীপুর আসছিলো। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-লক্ষীপুর মহা-সড়কের বাদামতলী এলাকায় আসলে দূর্বৃত্তরা চালকের আসন লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে চালক গুরুতর আহত হয় এবং চালকের পাশে থাকা অন্য দুইজনও আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহতদের দেখতে হাসপাতালে তাৎক্ষণিক ছুটে যান লক্ষীপুরের পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
এসএসপি মো. নাসিম মিয়া জানান, দূর্বৃত্তরা পিকআপ গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ করেছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা ছলছে।
এদিকে লক্ষীপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপে দগ্ধদের মধ্যে মো. লিটন (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রায় ৬ ঘন্টা পর মারা যান তিনি।
মৃতের শ্যালক আলমগীর জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে নেওয়ার পথে রবিবার রাত আড়াইটার দিকে কাঁচপুর ব্রিজের কাছে তিনি (লিটন) মারা যান। সকালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লিটনের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
লিটন নাটোর সদর উপজেলার ট্যাবারিয়া ইউনিয়নে রসুলঘর গ্রামের আবদুর জব্বারের ছেলে। লক্ষীপুরের পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর গ্রামে তার শ্বশুর বাড়ি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুর তাজুল ইসলামের বাড়িতেই থাকতেন বলে জানান লিটনের শ্যালক।
নিহত লিটনের স্ত্রী নাজমুন নাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার স্বামী পেশায় একজন শ্রমিক ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলার মজুচৌধুরীর হাটে বালু মহালে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রায় ৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে শিফাত হোসেন নিলয় নামে ৫ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রবিবার সকাল ১১টার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে তার স্বামী লিটন বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে কাজ শেষ করে সিএনজি অটোরিকসাযোগে বাড়ি আসার সময় পথিমধ্যে পেট্রোলবোমার হামলার শিকার হয়ে তার স্বামী মারা যান। এখন পুত্র সন্ত্রানকে অনিশ্চয়তায় ভূগছেন তিনি।
এদিকে, শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আবদুল করিম বলেন, পেট্রোলবোমা হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অন্যদিকে, পেট্রোল বোমায় নিহত একজন ও আহত আরও দুইজনের পরিবারকে সকাল ১১টার দিকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, জেলার সদর উপজেলার লক্ষীপুর-মজু চৌধুরীরহাট আঞ্চলিক সড়কের সরকারি মহিলা কলেজের অব্যবহৃত ভবনের সামনে রবিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে দুর্বৃত্তদের নিক্ষেপ করা পেট্রোলবোমায় তিন যাত্রী দগ্ধ হন। আহত হন আরও একজন।
দগ্ধরা হলেন- লক্ষীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে মো. আশিক (২২), আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুল করিম (৩২) ও লিটন (৩৫)।