বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » ঘনঘন নীতি পরিবর্তনের কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসছে না : ডিসিসিআই সভাপতি
ঘনঘন নীতি পরিবর্তনের কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসছে না : ডিসিসিআই সভাপতি
পক্ষকাল প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরে বিনিয়োগ বাড়ানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় খাতভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদী নীতি গ্রহন করা প্রয়োজন। এছাড়া ঘনঘন নীতি পরিবর্তনের কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসছে না। দাঙ্গাপ্রবন দেশ হওয়ার পরেও পাকিস্তানের বৈদেশিক বিনিয়োগ ৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। সরকারকে আরও দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদ।
ডিসিসিআই মিলনায়তনে বুধবার আয়োজিত ব্যবসা এবং বাণিজ্য উন্নয়নে ঢাকা চেম্বারের কর্মকাণ্ড শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উৎপাদন ও সেবাখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ২৩ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করে বলেন, ‘দ্রুত উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা গেলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যসমূহ অর্জন সম্ভব হবে। আর এ লক্ষকে সামনে রেখে আমাদের অর্থনীতি, কূটনৈতিক দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। দেশীয় সম্পদকে উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য সঞ্চালিত করতে হবে। অনুৎপাদনশীল খাতে সম্পদের অপচয় বন্ধ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত সুদ হারের কারণে বিনিয়োগকারীরা পিছু হটছে। শিল্প ও ব্যবসাখাতে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো মাত্রাতিরিক্ত সুদ আদায় করছে। ফলে প্রকৃত সুদের হার করপোরেট ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশে এবং এসএমই’র ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাংকগুলো বর্তমানে ঋণের বিপরীতে প্রতি তিন মাস অন্তর চার দফায় ঋণ ও সুদের ওপর সুদারোপ করছে। এতে করে মূলঋণের পরিমাণ ও কিস্তির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, যার ফলে বিনিয়োগকারী শিল্পোদ্যোক্তারা ঋণ গ্রহণে পিছু হটছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ হার কমালেও শিল্প খাতে তা কমানো হচ্ছে না, ফলে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে।’
এ সব কারণে ঋণপ্রদানের প্রক্রিয়া-পদ্ধতি সহজ করে সুদ হার সিঙ্গেল ডিজিটে সুনির্দিষ্ট করার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে যেয়ে করদাতার চাপ সৃষ্টি না করে করের আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
হোসেন খালেদ বলেন, ‘১৬ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে মাত্র ১৪ লাখ লোকের আয়কর সনদ আছে যার থেকে মাত্র ৭ লক্ষাধিক লোক আয়কর প্রদান করছেন। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে করদাতার আওতা বৃদ্ধি করার জন্য জোরালো সুপারিশ করছি। কারণ, কর হার বৃদ্ধি করতে করতে এক পর্যায়ে আর বাড়ানো সম্ভব হবে না। তাই করদাতার আওতা বৃদ্ধি করা ছাড়া রাজস্ব আয় বৃদ্ধির আর কোনো বিকল্প নেই।’
এ ছাড়া শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ইকুইটি ইভেস্টমেন্টদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কিছু নীতিমালা সহজীকরণ প্রস্তাব দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত নেগেটিভ ব্যালেন্স সমূহের শতভাগের পরিবর্তে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) এর ২৫ শতাংশ গচ্ছিত রাখা যেতে পারে। এ গচ্ছিত অংকের পরিমাণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ গচ্ছিত রির্জাভের অতিরিক্ত হবে। অর্থায়নকারীরা এ সমস্ত একাউন্টে আইপিও এর ঋণ প্রদান এবং এর থেকে মুনাফা সংগ্রহ অব্যাহত রাখবে। অর্থায়নকারীদের আইপিও নির্বাচন, ক্লাইন্ট নির্বাচন, বিনিয়োগ করা না করার পছন্দ এবং আইপিওতে তাদের শেয়ার বিক্রয়ের সময় সীমা সম্পূর্ণ তাদের এখতিয়ারে থাকবে। অর্থায়নকারীদের সব রকম ফ্লেক্সিবিলিটি থাকা উচিত যাতে সে যে পর্যন্ত না তার বিনিয়োগ তুলে না নিতে পারে সে পর্যন্ত তার পছন্দমতো ক্লাইন্টকে অর্থায়ন করতে পারেন। কারণ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ওই জটিল নিয়মের কারণে ইকুইটি ইভেস্টমেন্ট নিরুৎসাহিত হচ্ছে।’