বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » খালেদার নামে বিবৃতি: যে কোনো পরিণতির জন্য তৈরি
খালেদার নামে বিবৃতি: যে কোনো পরিণতির জন্য তৈরি
পক্ষকাল ডেস্কঃ ‘যৌক্তিক পরিণতিতে’ না পৌঁছানো পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন ‘যে কোনো পরিস্থিতি বা পরিণতির জন্য’ তৈরি।তার পক্ষে এই বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান। নিচে তার নামেই স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে।সরকারের ‘দমননীতির’ কারণে কেবল বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে দাবি করে ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার হবার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে খালেদা জিয়া মানসিকভাবে ‘চরম শোকাবহ’ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন উল্লেখ করে এতে বলা হয়, “এই বিপর্যয়ের ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই আমার সঙ্গে কী ধরনের নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে তা-ও সকলেই দেখছেন। সুপরিকল্পিতভাবে সর্বমুখী চাপ ও অনিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি করে তারা আমাকে জনগণ ও নেতা-কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সচেষ্ট।”
অবরোধে নাশকতার তিনটি ঘটনায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে পুলিশ যেসব মামলা করেছে ‘কোনো তদন্ত ও তথ্য প্রমাণ ছাড়াই’ তা ‘উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে’ করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।খালেদার নামে এই বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, “আমি সকলকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, কোনো অনৈতিক চাপ বা ভীতির মুখে আমি নত হব না ইনশাআল্লাহ। যে কোনো পরিস্থিতি বা পরিণতির জন্য আমি তৈরি আছি।”বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, গত ৬ জানুয়ারি সারা দেশে বিএনপির অবরোধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিরোধী জোটের অন্তত ৩৩ নেতা-কর্মীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে; আহত করা হয়েছে ‘শত শত নেতা-কর্মীকে’। ‘১৭ হাজারের বেশি’ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন ছাড়া ‘প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের’ স্বাভাবিক ও নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনাও ‘অসম্ভব করে’ তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
অবরোধ শুরুর পর থেকে নাশকতা ও সহিংসতায় এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর পরও বিএনপির এ আন্দোলন ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক’ বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “আমাদের আন্দোলন চলাকালে যাত্রীবাহী ও অন্যান্য যানবাহনে পেট্রোল বোমা মেরে ইতোমধ্যে নারী-শিশুসহ বেশ কয়েকজন নাগরিকের জীবন কেড়ে নেয়া হয়েছে। এই শোচনীয় মৃত্যুর পাশাপাশি বার্ন ইউনিটে ঝলসানো দেহ নিয়ে অনেকে যন্ত্রনায় কাৎরাচ্ছেন।
“নিরপরাধ মানুষের ওপর এই বীভৎস আক্রমণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। যারা হতাহত হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা জানাই। এইসব হীন ও নৃশংস হামলায় জড়িত প্রকৃত অপরধীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি আমরা আগেই জানিয়েছি, আজ আবারো তার পুনরাবৃত্তি করছি।”
তবে কারা এসব ঘটাচ্ছে সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জীবন-বিনাশী এই সব ঘৃণ্য হামলার ব্যাপারে ইতোমধ্যে জনমনে গভীর সন্দেহ ও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ পরিপূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রহরায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে জবরদস্তি করে শাসকগোষ্ঠী কিছু কিছু যানবাহন রাস্তায় নামাচ্ছে। সেই সব যানবাহনে কেমন করে ঘাতক বোমার নৃশংস হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে, তা এক জ্বলন্ত প্রশ্ন।”
এসব হামলার ঘটনাস্থল থেকে ‘তেমন কাউকে’ হাতে নাতে ধরা সম্ভব হয়নি বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, যদিও সরকার বলে আসছে, গত এক মাসে বিএনপির যে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে- তাদের বেশিরভাগই নাশকতার সময় হাতেনাতে আটক হয়েছেন।
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার নামে এই বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের এ আন্দোলন অভীষ্ট লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত চলতে থাকবে। আমি এ আন্দোলনে সকলকে শরীক হতে আবারো উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”