শনিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » গাইবান্ধায় বাসে পেট্রোল বোমায় শিশুসহ নিহত ৬, দগ্ধ ৪৬
গাইবান্ধায় বাসে পেট্রোল বোমায় শিশুসহ নিহত ৬, দগ্ধ ৪৬
পক্ষকাল প্রতিবেদক: গাইবান্ধায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় নিহত হয়েছে ছয়জন এবং দগ্ধ হয়েছে ৪৬ জন। নিহতদের মধ্যে দুজন শিশু।
পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থল এবং গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় শিশুসহ চারজন। দগ্ধ হওয়া ১৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে মারা যায় দুজন। এদের মধ্যে একজন শিশু এবং ঘটনাস্থলে নিহত হওয়া এক শিশুর মা।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের তুলসিঘাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর থেকে নাপু এন্টারপ্রাইজের একটি বাস প্রায় ৫০ থেকে ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পথে তুলসিঘাট এলাকার বুড়িরঘর নামক স্থানে ওই বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা।
গাইবান্ধা থেকে পুলিশ-বিজিবি পাহারা দিয়ে আনছিল একটি গাড়িবহর। ওই গাড়িবহরে ছিল নাপু এন্টারপ্রাইজের বাসটি। পুলিশ-বিজিবি থাকার পরও বাসে পেট্রোল বোমা হামালা হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
হতাহত হওয়া সবাই ওই বাসের যাত্রী। তাদের মধ্যে কেউ গার্মেন্ট শ্রমিক, কেউ রিকশাওয়াল এবং অধিকাংশই ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। কারো কারো সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও ঢাকায় যাচ্ছিল।
গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) আবু হানিফ জানিয়েছেন, চারজনের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রংপুরে পাঠানোর পর এক শিশু মারা গেছে। পরে সেখানে অগ্নিদগ্ধ আরো এক নারী মারা যান।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছয়জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যারা এখন গাইবান্ধায় চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদের কারো ২০ শতাংশ, কারো ৩০ শতাংশ, কারো ৫০ শতাংশ এমনকি কয়েকজনের ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
আমাদের রংপুর প্রতিবেদক জানিয়েছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেসব অগ্নিদগ্ধকে নেওয়া আনা হয়েছে তাদের শরীরের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ও পৌর প্যানেল মেয়র মোস্তাক আহমেদ রনজু দাবি করেন, জামায়াত-শিবির কর্মীরাই এই সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
আহতদের সঙ্গে কথা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসটি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাচপীর থেকে দিনমজুর, শ্রমিক, গার্মেন্টসকর্মী, কৃষিশ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীদের নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। বাসটিতে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬৫ জন যাত্রী ছিল।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক এহছানে এলাহী বলেন, হামলাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।