পাবনার মাঠে নেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা
জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর (পাবনা) : ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের মাঝেই বিএনপি ডাকা হরতাল পালিত হচ্ছে না পাবনার চাটমোহরে।
তবে গ্রেফতার আতংকে মাঠে নেই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই গাঢাকা দিয়েছেন।
হরতালে চাটমোহর বাস স্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও সব কিছুই স্বাভাবিক রয়েছে। মালবাহী ট্রাকও চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
বিলম্ব হলেও চাটমোহর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনগুলো ছেড়ে যাচ্ছে ও আসছে। দোকান-পাট সবই খোলা থাকছে। হরতালের পক্ষে মাঠে নেই কেউ। তাই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে গত শনিবার গভীর রাতে চাটমোহর পৌরসদরের কয়েকটি স্থানে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির ৭জন নেতা-কর্মীকে আটক করে থানা পুলিশ। এরপর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় হরতাল মাঠে দেখা মিলছে না তাদের।
এদিকে পাবনার চাটমোহরে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের এক সপ্তাহ পরও দোষীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা উদ্ধার হওয়ার মামলায় আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অপহরণ-ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা, আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত আসামীরা রয়েছে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
পুলিশের একই বক্তব্য, আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ বক্তব্যে মামলার বাদী ধর্ষিতার মা লেকজান বেগম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মঈনুদ্দীন জানান, আসামীদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। এখনো তা অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, পাবনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত জাহান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় ধর্ষিতার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত মামলার বাদী মেয়েটির মা লেকজান বেগমের জিম্মায় দিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের সেনগ্রাম মহাজের পাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে অষ্টমনিষা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে গত ১৫ ডিসেম্বর’১৪ সেনগ্রাম হিন্দুপাড়ার নির্মল সূত্রধরের ছেলে মিঠুন সূত্রধর, তার ২ সহযোগী চরসেনগ্রামের (বর্তমান রেলবাজার) সিরাজ হোসেনের ছেলে আলমগীর ও দোদারিয়া গ্রামের বিশা প্রামানিকের ছেলে লিটন অপহরণ করে। মেয়েটি ওই দিন তার মামার বাড়ি যাওয়ার পথে জাবরকোল ব্রীজের কাছে একটি সিএনজি অটোটেম্পু করে তাকে অপহৃত হয়। এরপর তাকে রেলবাজার এলাকায় আলমগীরের বাড়িতে আটকে রেখে মিঠুন প্রতি রাতেই তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
অপহরণ ও আটকে রেখে ধর্ষণের এক সপ্তাহ পর ২৯ ডিসেম্বর মেয়েটিকে শাহনগর একটি ইটভাটার কাছে ফেলে রেখে চলে যায়।
স্থানীয়রা মূমুর্ষ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা করে। হাসপাতালে ৩ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল টিম গঠন করে মেয়েটির চিকিৎসা এবং ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। ঘটনার পর অপহৃতার মা লেকজান বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চাটমোহর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলা নং-১৬।
থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।