সোমবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » বাংলাদেশে বিপর্যয় সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে পাকিস্তান: পুলিশি তথ্য
বাংলাদেশে বিপর্যয় সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে পাকিস্তান: পুলিশি তথ্য
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশে অবস্থান করে স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের পাশাপাশি জাল রুপির বিস্তার ঘটিয়ে চরম বিপর্যয় সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে পাকিস্তানি একটি চক্র। এ চক্রের কয়েক জনকে গ্রেফতারের পর এমনই তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এতে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে মন্তব্য করে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশি-বিদেশি নানা চক্র এসব অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্য গঠনের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
পাকিস্তান থেকে আসা ফ্লাইটে একের পর এক ধরা পড়ছে ভারতীয় জাল রুপির চালান। শুল্ক গোয়েন্দাদের হিসেবে, গত ২০ মাসে কেবল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই জব্দ করা হয়েছে প্রায় ২০ কোটি ভারতীয় জাল রুপি। এরমধ্যে গত এক মাসেই উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫ কোটি জাল রুপি।
এসব ঘটনায় জড়িত থাকায় হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক পাকিস্তানি। যাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে পাকিস্তান দূতাবাসের এক ভিসা কর্মকর্তাও। সবশেষ গত শনিবার স্বর্ণ চোরাচালানের সময় গ্রেফতার দু’জনের মধ্যে একজন পাকিস্তান এয়ারওয়েজের বাংলাদেশ স্টেশনের ম্যানেজারের গাড়ি চালক বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তারা বলছেন, ভারতীয় জাল রূপি’র ব্যাপক বিস্তার ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ক্রমেই মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালানের অভয়ারণ্যে পরিণত করার নীল নকশায় মেতেছে পাকিস্তানি একটি চক্র।
এখানেই শেষ নয়, অবৈধ এসব কারবার থেকে অর্জিত অর্থ উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
বিমান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে এই টাকাগুলো নিয়ে এসে বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনকে এই টাকাগুলো দেয়া হচ্ছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা তাদের লক্ষ্য হতে পারে। আমরা এ তথ্যগুলো নেয়ার চেষ্টা করছি। মূল হোতাদের বের করারও চেষ্টা করছি।’
এ অবস্থায় জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে, কূটনৈতিক উপায়ে যতদ্রুত সম্ভব এর সুষ্ঠু সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জে. (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছর থেকে আমরা রাজনৈতিক মনোযোগের মধ্যে আছি। এখন কিন্তু আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পন্ন দৃষ্টি রাজনৈতিক। নিয়মতান্ত্রিক তাদের যে কাজ সেখানে তাদের পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে পারছে না। কাজেই এটা তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিরাপত্তা সব কিছুর জন্যই এটা উদ্বেগজনক বিষয়। বিশেষ করে যখন সার্ক ভুক্ত রাষ্ট্র থেকে এই ধরণের একটা বিষয় আমরা দেখি।’
আরেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জে. (অব.) শহিদুল আনাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশ কে খুব কঠোরভাবে কূটনৈতিক পর্যায়ে এটাকে উত্থাপন করা উচিত।’
পাশাপাশি বিমানবন্দরসহ দেশের সবগুলো প্রবেশপথে আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপের তাগিদ দিয়েছেন তারা।