শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » » ব্লগার অভিজিৎ রায় মারা গেছেন
ব্লগার অভিজিৎ রায় মারা গেছেন
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরাকাঘাতে আহত মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গুরুতর আহত তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদক চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের আবাসিক সার্জন রিয়াজ মোর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রাত ৯টার দিকে টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ ও তার স্ত্রী রাফিদা আহম্মেদকে (৩৪) কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। অভিজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. অজয় রায়ের ছেলে।
আহত রাফিদা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে আমরা আমেরিকা থেকে এসে রাজধানীর ইন্দিরা রোডে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছি। আজ আমরা বইমেলায় এসেছিলাম। মেলা থেকে বের হওয়ার সময় টিএসসি’র বটতলায় পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় টিএসটি মোড়ে কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এই দুজনকে কুপিয়ে আহত করে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার এসআই সোহেল রানা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানার চেষ্টা করছে, বিষয়টি কেন ঘটেছে।
টিএসসির কাছেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলে। তবে সাড়ে ৯টায়ও ওই এলাকায় জনসমাগম ছিল। কী কারণে তাদের ওপর এই হামলা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
এই খবরে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য্য। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন -
অভিজিতের নিথর রক্তাক্ত দেহ যখন সাদা কাপড়ে ঢেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি থেকে মর্গে নিয়ে গেল পারভেজ আলম ডুকরে কেঁদে উঠলো, অনন্য আজাদ আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। আমি বজ্রাহতের মতো দাড়িয়ে রইলাম। বাকি বিল্লাহর কাছে অভিজিৎ আর তাঁর স্ত্রীর আক্রান্ত হবার খবর শুনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছুতে পৌছুতেই শুনলাম ততক্ষণে অভিজিৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছে।
একজন লেখকের কি নির্মম মৃত্যু। কী ভয়ানক!!!
অভিজিতের প্রকাশ্য শত্রু ছিল। অভিজিতকে হত্যার প্রকাশ্য ঘোষণা অনলাইনে অনেকেই দিয়েছে। অজিজিতের লেখাগুলো যারা অনলাইনে ফলৌ করতেন তাঁরা সেই মন্তব্য গুলো নিশ্চয় লক্ষ করেছেন। মুছে দেয়া না হলে সেগুলো এখনো আছে হয়তো। অভিজিতের বই বিক্রির জন্য রকমারিতে হামলা করার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি আইন আছে সেই আইন প্রয়োগ ও হচ্ছে কিন্তু অনলাইনে প্রকাশ্য হত্যার হুমকি সেই আইনে যেন অপরাধ নয়।
বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ টার্গেট একজন নাস্তিক। নাস্তিক মানেই আক্রমন যোগ্য, হত্যা যোগ্য। নাস্তিক কে প্রকাশ্য হুমকি দেয়া হত্যা করা যেন কোন অপরাধ নয়। নির্মম মৃত্যুই যেন তাঁদের প্রাপ্য।
ইতিমধ্যেই অনুমানে ব্লেইম দেয়া শুরু হয়েছে। নানা রাজনীতির ইকুয়েশনে মেলাতে চাইছেন এই হত্যাকাণ্ডের সাথে। আসুন আমরা কোন অনুমান না করি, পূর্ব অনুমানের ভিত্তিতে তদন্ত যেন না হয়। এমন একটা জটিল রাজনৈতিক সংকট কালে অনেক অন্ধকারের শক্তি সক্রিয় থাকে। অভিজিতের মতো একজন সহজ টার্গেট নাস্তিক কে যদি কোন অন্ধকারের শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বলি হতে হয় সেটায় অবাক হবার কিছু নেই।