সরকার কোন পথে
সাব্বির আহমেদ
ব্যাপক আলোচিত সমালোচিত’ ২০১৩ র ০৫ জানুয়ারী নির্বাচনের ১লা বর্ষপূর্তির পর থেকে বেশ টান টান উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ। অবশ্য গত বছর বলতে গেলে বেশ শান্তই ছিল বাংলাদেশ নামের এই জনপদটি। কিন্তু ৫ জানুয়ারীকে কেন্দ্র করে দেশের প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল একে অন্যের কাদা ছুড়াছুড়ির প্রায় শেষ কিনারায়। একদিকে স্বাধীন মত প্রকাশ করার শর্ত সাপেক্ষে জনসভা করতে না দেয়া অন্যদিকে পেট্রল দিয়ে অন্ত:সত্ত্বা তথা অনাগত জীবন ধ্বংস করা। একদিকে সুখ সমবেদনার কপাট বন্ধ অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় আহারের পথে কাঁটা সৃষ্টি করা । এ যেন এক প্রাগঐতিহাসিক কটুক্তি “তলা বিহীন ঝুড়ির নাম বাংলাদেশ” কে স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের দিন পঞ্জিকায় যুক্ত হয়েছে গণতন্ত্র হত্যা দিবস ও সংবিধান সমুন্নত দিবস। একই দিনে দুই দিবস পালন করতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছে সাধারণ জনগণ। তারই চরম মূল্য হিসেেব এ পর্যন্ত অঙ্গারময়ী মত্যুর সংখ্যা প্রায় তিন অংকের কোটা ছুঁয়েছে। অন্যদিকে জনগণের জানমাল তথা সার্বিক নিরাপত্তার ফাঁক ফোঁকরে বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড মোটেও থেমে নেই। মানবাধিকার বিষয়ক সকল সংগঠক ও গণমাধ্যমকে এ সব পরিস্থিতি উপলব্ধি ছাড়া সকল পথই রুদ্ধ। একদিকে যে কোন মূল্যে নির্বাচন অন্যদিকে সংকট উত্তরনে কঠোর পদেক্ষপ। আরেকদিকে “আলোচনার কোন বিকল্প নেই” বলে রীতিমতোই গলা ফাটিয়ে যাচ্ছে সমাজের সুশীল শ্রেনীর প্রতিনিধিরা। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য মাঠের কন্ডিশন উনিশ বিশ হলেও মানসিক কন্ডিশনে এখনও ফাটল ধরাতে ব্যর্থ খোদ ১৫ লাখ তরুন প্রজন্ম। সরকার দল চাচ্ছে যে কোন মূল্যে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া। অন্যদিকে সরকারের বিষ ফোড়া হিসেবে খ্যাত বিএনপি-জামায়াত তথা কুঁড়ি দল চাচ্ছে যে কোন মূল্যে আপাতঃ সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা। এই টার্গেটের তীরে নোঙ্গর ফেলানোর জন্য দু-দলের মরিয়া চেষ্টা অব্যহত। সরকারের সকল পাশবিক শক্তি এখনও বলবৎ থাকায় বিন্দু মাত্র ছাড়ের প্রসঙ্গে বরাবরই দেখাচ্ছে বৃদ্ধাঙ্গুলি। আন্দোলন কারী জোটও সরকারকে মাথানত করাতে চেষ্ঠার কোন অনীহাতে দেখাচ্ছে বৃদ্ধাঙ্গুলি। এরই মধ্যে ভাসা ভাসা উদ্বেগ জানাতে শুরু করছে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র । বিএনপি এ উদ্বেগকে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি মনে করলেও সরকার চাপের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বর্তমান অবস্থাকে রাজনৈতিক সমস্যা বলতেই নারাজ। ঘরে ক্ষুধার জ্বালা আর বাইরে পেট্রল বোমার আগুন, সাধারণ জনগণ যাবে কোথায়? যে যাই বলুক আর সরকার ও আন্দোলন কারীরা যে পথেই হাটুক না কেন চলমান সংকটাবস্থা উত্তরনকল্পে সিংহভাগ জনগণের একটাই প্রার্থনা সংলাপ নামের ব্যাপক পরিচিত এই শব্দটির কার্যকরী বাস্তবায়ন।