শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » নাশকতার জন্য স্কাইপকে ব্যবহার করছে জামায়াত-শিবির
নাশকতার জন্য স্কাইপকে ব্যবহার করছে জামায়াত-শিবির
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃচলমান হরতাল-অবরোধে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি নাশকতা চালানোর জন্য ইন্টারনেটের স্কাইপকেই ব্যবহার করছে জামায়াত-শিবিরের নীতি-নির্ধারকরা। প্রতিদিন স্কাইপে’র মাধ্যমে কর্মীদের সাংগঠনিক দিক-নির্দেশনা যেমন দেয়া হচ্ছে, তেমনি নিজেদের মধ্যে নাশকতার পরিকল্পনার তথ্য আদান-প্রদানও চলছে সমান তালে। চট্টগ্রামে নাশকতা চালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়া কেন্দ্রীয় শিবির নেতা এনামুল কবীর আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। পুলিশের দাবি, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের পর সারাদেশে নাশকতা সৃষ্টির অন্যতম পরিকল্পনাকারী সে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের ফোন আলাপ সহজেই রেকর্ড করতে পারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত কয়েক বছর ধরে অপরাধীদের শনাক্তের পাশাপাশি অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখছিলো তারা। এ অবস্থায় আন্ডার গ্রাউন্ডে থেকে স্কাইপ’র মাধ্যমে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং নাশকতার পরিকল্পনা করছে জামায়াত-শিবির। চট্টগ্রাম বন্দর এবং তেলের ডিপো উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসা শিবির নেতা এনামুল কবীরের আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এসব তথ্য বের হয়ে এসেছে।
সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান বলেন, ‘ দোষ স্বীকার করেছেন যে, ওনারা কিছু নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে চেয়েছিলেন। কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, কোথায় ঘটাতে চেয়েছিলেন এসব বিষয়ে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, এটা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ‘
পুলিশের দাবি, শিবিরের ৫ শীর্ষ পরিকল্পনাকারীর অন্যতম এনামুল কবীর। বিগত ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের পর সারাদেশে বড় ধরণের নাশকতা সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা ছিলো তার। যে কারণে এবারো তাকে চট্টগ্রামে দেয়া হয়েছিলো বিশেষ দায়িত্ব। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এনামুল কবীর উল্লেখ করে, ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রেপ্তারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিদিনই স্কাইপে’র মাধ্যমেই নাশকতার নির্দেশনা দিয়েছে।
সিএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল বলেন, ‘এখন সরাসরি কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে না। যত ধরণের ষড়যন্ত্র আছে সব ধরণের ষড়যন্ত্র কিন্তু ইলেক্ট্রোনিক্যালী হচ্ছে। ‘
ডব্লিউ থি এক্সপ্লোয়ার্স বাংলাদেশের সিইও রাজীব দাস বলেন, ‘স্কাইপের মাধ্যমে যেহেতু কাউকে শনাক্ত করা যায় না। এ কারণে সে সহজেই এবং দ্রুতভাবে সবাইকে সব ধরণের নির্দেশনা দিচ্ছে এবং এর ফলে অপরাধ খুব সহজ হচ্ছে। ‘
এ অবস্থায় পুলিশকেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান সিএমপি কমিশনার। অপরদিকে আই টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে এখনই সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সিএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল বলেন, ‘স্কাইপে অসুবিধা হলো যে, তার পরিচয় সহজে ধরা পড়বে না। এটা তাদের ধারণা, এ জন্য তার ওখান থেকে বার্তাটি স্কাইপের মাধ্যমে তার সহযোগীদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছে সহজ ভাবে। তাই বিশেষভাবে তারা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে ব্যবহার করছে। ‘
ডব্লিউ থি এক্সপ্লোয়ার্স বাংলাদেশের সিইও রাজীব দাস বলেন, ‘নিজেকেও গোপন রাখা যাচ্ছে কোনো রকম ধরার বা বোঝার উপায় নাই। এ কারণে সবাই স্কাইপ, ভাইবারসহ এধরনের যেগুলো আছে তারা ব্যবহার করছে। ‘
ঢাকায় অবস্থানরত জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় শিবির সভাপতি আবদুল জব্বার এবং অফিস সম্পাদক নাবিদ আনোয়ার নিয়মিত স্কাইপে’র মাধ্যমে সারাদেশে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে এনামুল কবীর তার জবানবন্দীতে উল্লেখ করেছে। আর চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি নুরুল আমিন এবং দক্ষিণের সভাপতি সোহেল সে যোগাযোগের সমন্বয় করে থাকে।