চলে গেলেন সিঙ্গাপুরের জনক লি
নিজস্ব প্রতিবেদক : আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক লি কুয়ান ইয়েও আর নেই। সোমবার সকালে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
তার মৃত্যুতে সিঙ্গাপুরের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী এবং তার পুত্র লি সিয়েন লিং সাত দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। শোক পালন শেষে আগামী রোববার তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
জাতির উদ্দেশে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধানমন্ত্রী লি বলেছেন,‘তিনি আমাদের স্বনির্ভর জাতি হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তার অবদানের কারণেই আমরা সিঙ্গাপুরি জাতি হিসেবে গর্ব বোধ করতে পারছি। তার মত আর কোনো রাষ্ট্রনায়ক আমরা পাব না।’
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাকে ‘ইতিহাসের সত্যিকারের মহানায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তাকে এশিয়ার একজন স্বতন্ত্র প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে গত ৫ ফেব্রুয়ারি লিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এক মাসের বেশি সময় ধরে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ তার মারা যাওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে এক সরকারি বিবৃতিতে তিনি বেঁচে আছেন বলে জানান হয়।
লি’কে বলা হয়ে থাকে আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক বা স্থপতি। তিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আইনের আওতায় থাকা মশা উপদ্রুব জলাভূমি থেকে সিঙ্গাপুরকে বিশ্বে জনপ্রতি সবচেয়ে বেশি আয়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতার-ঘরে পরিণত করেছিলেন। তার একক প্রচেষ্টায় দেশটি সাধারণ পর্যায় থেকে বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছুতে পেরেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
১৯২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ শাসিত সিঙ্গাপুরে জন্মগ্রহণ করেন লি কুয়ান ইয়েও । ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করার পর নিজের নাম থেকে ইংরেজি হ্যারি নামটি বাদ দেন। ১৯৫৯ সালে তিনি সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশটি পরিচালনা করার পর ১৯৯০ সালে তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান।