রক্ষক যখন ভক্ষক
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ২৭ মার্চ ২০১৫ঃ
সরকারি দলের নেতারা কাটছেন সরকারি বিদ্যালয়ের গাছ। পারখির্দ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশাল আকৃতির তিনটি সবুজ তরতাজা কড়ই গাছ তারা কাটতে শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চলছে এই গাছ কাটার কাজ। এতিমখানায় টাকা দেবার কথা বলে তারা এই গাছ কাটছেন, আর স্থানিয়রা বলছেন এভাবে গাছ বিক্রি করে টাকা আত্বসাত করার চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসি জানান, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর মালিয়াট ইউনিয়নের পারখির্দ্দা গ্রামে রয়েছে পারখির্দ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি মঙ্গলপোতা বাজারের সন্নিকটে অবস্থিত। বারোবাজার-মল্লিকপুর সড়কের ধারে এই বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবলী খাতুন জানান, ইতিপূর্বে স্কুলের পক্ষ থেকে রাস্তার ধারে বেশ কিছু গাছ লাগান সেই সময়ের শিক্ষকেরা। যা ইতোমধ্যে অনেক বড় হয়েছে। তিনটি আছে কড়ই গাছ, বাকি ৮ টি বিভিন্ন বনজ গাছ।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার স্বাধীনতার দিনে গ্রামের কিছু লোক কড়ই গাছগুলো কেটে ফেলছেন বলে শুনে তিনি সেখানে যান। গাছ কাটা বন্ধ করতে বললে তারা খারাপ আচরন করেন। গ্রামের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষকে কিছু না বলে গাছগুলো পারখির্দ্দা গ্রামের আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা বিক্রি করে দিয়েছেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ গাছ বিক্রির কারন জানতে চাইলে বিক্রিত টাকা পাশ্ববর্তী একটি এতিমখানায় দেওয়া হবে বলে জানান। গ্রামবাসিকে তারা জানিয়েছেন রাস্তার কাজ হবে, এই গাছগুলো না কাটা হলে কাজ করা যাবে না। যে কারনে কাটা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিবলী খাতুন আরো জানান, বিষয়টি তিনি নিজে বন্ধ করতে না পেরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সালমা খাতুনকে জানিয়েছেন। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। এ ব্যাপারে সালমা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানোয়ার হোসেন মোল্লাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখছেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেও ব্যস্ততার কারনে তিনি কথা বলতে পারেননি।
মালিয়াট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পারখির্দ্দা গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান আলী জানান, গ্রামের মানুষের সাথে আলোচনা করে এই গাছ কাটা হচ্ছে। রাস্তা চওড়া করার কাজ হবে। যে কারনে গাছগুলো কাটা প্রয়োজন। তাই তারা আলোচনা করে গাছ কাটছেন। আর গাছ বিক্রির টাকা গ্রামের এতিমখানায় দেওয়া হবে। কেউ কোনো টাকা আত্বসাত করতে এটা করছে না বলে তিনি দাবি করেন।