বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়ীতে নিহত ব্লগার ওয়াশিকের দাফন সম্পন্ন
লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়ীতে নিহত ব্লগার ওয়াশিকের দাফন সম্পন্ন
মোঃ রুবেল হোসেন রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হাতে নিহত ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুর জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর গ্রামের বাড়ী লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের আবদুল করিম হাজী বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে এ দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ৯টায় স্থানীয় উত্তর হাজীপুর দাইগড়া জামে মসজিদ মাঠে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন স্থানীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কালাম। এর আগে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী নিয়ে আসা হলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার স্বজনরা। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এ সময় কান্না কন্ঠে স্বজনরা জানায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়। ছোট বেলা থেকেই খুবই ধার্মীক ছিলো, সে খুব মেধাবী ছাত্র ছিলো, যারাই এই নির্মম ভাবে ওয়াশিককে হত্যা করেছে সরকারের কাছে, দেশ ও জাতির কাছে আমরা এ হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ বিচার চাই।
এলাকাবাসী জানায়, ২০০৪ সালে স্থানীয় চন্ডীপুর চরমনসা উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেই ঢাকায় পড়াশুনার জন্য যায় ওয়াশিক। ২০১৪ অনার্স শেষ করে বিবিএ পড়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে বাবু। পরিবার ও স্থানীয়দের দাবী, বাবু পড়ালেখায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি বাবু ‘কুচ্ছিত হাঁসের ছানা’ কিংবা ‘গন্ডমূর্খ’ নামেও লিখালিখি করায় ব্লগে ওয়াশিকুর বাবু নামেই পরিচিত ছিলেন। এ ছাড়া পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা, বড় বোন শিমু ও নিহত বাবু সহ তিনজনের সাজানো সংসার ছিলো তাদের। প্রায় ২০ বছর আগেই মা রেহানা পারভিন মারা যান। সম্প্রতি বাবার উপর কিছুটা ছাপ কমাতে পড়াশুনা, লেখালিখির পাশাপাশি নিজেও সামান্য বেতনে রাজধানী মতিঝিলের শাপলা চত্বরের পাশে ফারইস্ট এ্যাভিয়েশন এজেন্সিতে ট্রেনার হিসেবে কাজ করছিলেন ছিলেন বলে জানা যায়। স্থানীয়রা আরো জানায়, অত্যন্ত সৎ, ভদ্র, বিনয়ী এবং আতœপ্রত্যয়ী এই ব্লগার কোন রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকতে কেই দেখেনি। কারো সাথে কখোনো বিরোধে জড়াতে দেখেনি কেউ। বাজে কোন অভ্যাসও ছিলোনা তার। তার কোনো শত্রু থাকতে পারে এমনটা মনে করছেন না গ্রামবাসী। অথচ ব্লগার হিসাবে গণমাধ্যমে তাকে হত্যার কথা শুনে সবাই হতবাক এবং বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেন তারা।
চন্ডীপুর চরমনসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন অর রশিদ জানায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু ২০০৪ সালে এ স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা চলে যায়। সে ছাত্র হিসাবে খুবই ভালো ও মেধাবী ছিলো।
এ ব্যাপারে চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শোকসন্তব পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ওয়াশিকুর রহমান বাবু আমারই এলাকার ছেলে। সামান্য লেখালেখীর কারনে ঢাকার বাড়িতে ঘাতক দূস্কৃতিকারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এ নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই।