কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন
একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার ভোর ৫টার দিকে তার নিজ গ্রাম শেরপুরের বাজিতখিলা ইউনিয়নের কুমরি মুদিপাড়া তাকে কবর দেয়া হয়।
কড়া নিরাপত্তায় এতিমখানা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় নামাজে জানাজা। নামাজে জানাজায় অংশ নেন স্বজন ও গ্রামের লোকজন। মাওলানা আবদুল হামিদ এতে ইমামতি করেন। সবশেষে শেষ ইচ্ছা অনুসারে তাকে দাফন করা হয় তার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানার পাশেই।
এর আগে র্যাব-পুলিশ পাহারায় রোববার ভোর সোয়া ৪টার দিকে ডিএমপির নম্বরবিহীন লাশবাহী ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহটি নিয়ে যাওয়া হয় বাজিতখিলায়। রাত ৪টা ৪০ মিনিটে কামারুজ্জামানের মরদেহ তার পরিবার পরিজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার বড় ভাই কফিলউদ্দিন মরদেহ গ্রহণ করেন।
এর আগে কামারুজ্জামানের মরদেহ কারাকর্তৃপক্ষ ঢাকা জেলা প্রশাসককে বুঝিয়ে দেয়। এরপর জেলা প্রশাসক মরদেহ ডিএমপির হাতে হস্তান্তর করে। ডিএমপি পরবর্তীতে গাজীপুর এবং গাজীপুর পুলিশ ময়মনসিংহ পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। সবশেষে ময়মনসিংহ পুলিশ কামারুজ্জামানের মরদেহ শেরপুর পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মরদেহটি শেরপুরের প্রশাসনের সহযোগিতায় দাফন করা হয়। সেই সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আখেরুল ইসলাম রাসেলও শেরপুর যান। র্যাব, পুলিশ, ঢাকা মহানগর পুলিশ, ঢাকা জেলা পুলিশ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০টি গাড়ি সঙ্গে ছিল। পুলিশ-র্যাবের গাড়ি ছাড়া আরো একটি অ্যাম্বুলেন্সও ছিল লাশের বহরে।
এদিকে কামারুজ্জামানের ফাঁসির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকেই কুমরি মুদিপাড়া গ্রামের তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা ও এতিমখানার পাশেই কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করা হয়। তবে শিলাবৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়। রাত ২টার পরে কবর খোঁড়ার কাজ শেষ হয়।
বাজিতখিলা বাজার ও আশপাশে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। আগে থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ রেড এলার্ট জারি করে। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও বাসিন্দাদের ওই গ্রামে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মেহেদুর করিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপরের নির্দেশে ওই গ্রামে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, রাত সাড়ে ১০টায় কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হয়। এরপর প্রায় ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যূকূপ থেকে তার মরদেহ বের করে আনা হয়। হাত-পায়ের রগ কেটে ময়নাতদন্ত শেষ করা হয়।
শেরপুরের সোহাগপুরে ১২০ জনকে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝুলে দণ্ডিত হলেন এ যুদ্ধাপরাধী।