শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » » অবশেষে স্থানীয়রাই উদ্ধার করল শিশু জিহাদের লাশ
অবশেষে স্থানীয়রাই উদ্ধার করল শিশু জিহাদের লাশ
পক্ষকাল প্রতিবেদক : অবশেষে স্থানীয়রাই উদ্ধার করল শিশু জিহাদের লাশ। রুদ্ধদ্বার ২৩ ঘন্টার ব্যর্থ অভিযানের পর পরিত্যক্ত পাইপ থেকে উদ্ধার করা হল শিশু জিহাদকে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করার আধঘণ্টা পরেই তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির পরিত্যক্ত পাইপ থেকেই স্বেচ্ছাসেবকদের নিজেদের তৈরি করা বর্শার মতো অ্যাঙ্গেল দিয়ে জিহাদকে টেনে তোলেন। এর পর পরই তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিয়াজ মোর্শেদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ইসিজি করার পর জিহাদকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ডা. রিয়াজ মোর্শেদ গণমাধ্যমকে জানান, উদ্ধারের বেশ কয়েক ঘণ্টা আগেই মারা যায় শিশু জিহাদ। তার শরীরে সামান্য জখমের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে তিনি জানান।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে পরিত্যক্ত ওই পাইপের মধ্যে পড়ে যায় সাড়ে তিন বছর বয়েসী শিশু জিহাদ। এর ২৩ ঘণ্টা পর পরিত্যক্ত পাইপ থেকেই উদ্ধার করা হল জিহাদের লাশ।
উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেওয়া রামপুরার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মুন গণমাধ্যমকে জানান, উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণার পর তিনিসহ বেশ কয়েকজন মিলে নিজেদের তৈরি করা বর্শার মতো এ্যাঙ্গেল দিয়ে জিহাদকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান। প্রায় আড়াই শ’ ফুটের মতো রশি ফেলার পর বর্শায় কিছু আটকানো বিষয়টি অনুভব করেন তারা। এরপর তারা তা টেনে উপরে ওঠালে দেখা যায়, শিশু জিহাদের গায়ের জামায় আটকায় বর্শাটি।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ঘটনার পর পাইপের ভেতর আটকেপড়া শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ, র্যাবসহ স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা অংশ নেয়।
শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত চলে প্রথম দফার উদ্ধার অভিযান। রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনাটিকে ‘গুজব’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকর্মী দলের সঙ্গে কথা বলে তার ধারণা হয়েছে যে পাইপের ভেতরে শিশুটি নেই। তবে তারপর বিষয়টি নিশ্চিত হতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি মো. হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভেতরে কোনো ভিকটিম নেই।’ অভিযান শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের আর কোনো কাজ নেই। দেশীয় পদ্ধতিতে স্থানীয় মানুষ যে চেষ্টা করছে, আমরা তাতে সহায়তা করছি।’
এরপর বিকেল পৌনে তিনটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
কিন্তু তার সংবাদ সম্মেলন চলাকালেই উদ্ধার হয় জিহাদের লাশ। শিশু জিহাদের উদ্ধার কাজে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।