এখনও ৫ কোটি শ্রমিকের জীবনমান অপরিবর্তিত
পক্ষকাল প্রতিবেদক: এখনো দেশের প্রায় পাঁচ কোটি শ্রমিক কাজ করেন, অনির্ধারিত খাতে। গেলো ৪৪ বছরে এদের আয় কয়েকগুণ বাড়লেও; জীবনমানে আসেনি গুণগত তেমন কোনো পরিবর্তন। অথচ এ সব শ্রমিককে নির্ধারিত খাতে যুক্ত করা গেলে, অর্থনীতিতে আসতো বড় পরিবর্তন।
উৎপাদনশীলতা বাড়তো, কয়েকগুণ। সরকার বলছে, শিগগিরই এই পরিবর্তন সম্ভব নয়। কেননা, শ্রম আইনেই এদের বিষয়ে নেই সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা। তাই, তাকিয়ে থাকতে হবে ভবিষ্যত পরিকল্পনার দিকেই।
কখনো রোদ কখনো বা ছায়া।ধানের ক্ষেতে নিরলস কাজ করতে এসব বাছ বিচারের সুযোগ নেই ষাটোর্ধ্ব হোসেন আলীর।কেননা, জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তার কেটেছে এভাবে।কিন্তু আর্থিক স্বচ্ছলতার মুখ দেখা হয়নি কখনো।একই অবস্থা লোকমানের। তার ভাষায়, আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু খরচের খাতাও ভারী হয়েছে তার চেয়ে বেশি।
হোসেন আলী কিংবা লোকমানের মতোই জীবনের ১৫ বছর হাড়ভাঙ্গা শ্রমে পার করেছেন পাথর শ্রমিক বাবলু। গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় এসেছেন ভাগ্য বদলের আশায়।কিন্তু চোখের সামনে বদলেছে বহু কিছু, কেবল তার ভাগ্য ছাড়া।অবশ্য, তাতে ক্ষোভ নেই খুব বেশি।
হোসেন আলী, লোকমান কিংবা সোহেল। আয় করেন ঠিকই।কিন্তু স্বীকৃতি নেই সরকারি খাতায়। তাই জীবনটাও এক রকম সংজ্ঞায়িত ভাসমান শ্রমিকে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে, ২০১০ সালে শ্রমিক ছিল ৫ কোটি ৬৭ লাখ।আর জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধি হিসাব করলে পাঁচ বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে আরো অন্তত ১০ লাখ।কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি, এর ৮৭ শতাংশ বা পাঁচ কোটির বেশিই ভাসমান শ্রমিক। যাদেরকে অর্থনীতির মূল ধারায় নিতে পারলে পরিবর্তনটাও হতে পারত বহুগুণ।
আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক খাত বাদ দিয়েও বাংলাদেশে যে পরিমাণ বেকার, তা বহু দেশের মোট শ্রমিকের চেয়ে বেশি।তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, সংখ্যা নিয়ে আত্মতুষ্টি আর কতোদিন? সময় এসেছে, একে সম্পদে পরিণত করার চ্যালেঞ্জ হাতে নেয়ার।