শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » » সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল
পক্ষকাল প্রতিবেদক : গাজীপুরে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় এবং বিএনপির নেতাদের মুক্তি দাবিতে সোমবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বধীন ২০ দলীয় জোট।
এই একই ইস্যুতে শনিবার গাজীপুরে হরতাল এবং সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেছে জোটটি।
শনিবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা আলমগীর বলেন, গাজীপুরে ২০ দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত সমাবেশ করতে না দেওয়ায়, সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও ঢাকা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দীন আহমেদ পিন্টুসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীর মুক্তি দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।
বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করেন, সরকার পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগ দিয়ে ‘নাটক’ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। বিএনপিকে গাজীপুরের ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ করতে দেয়নি। অথচ আজ সেখানে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসীরা’ জড়ো হয়ে মিছিল করেছে।
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে দুই আইন চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের জন্য এক আইন আর বিরোধী দলের জন্য আরেক আইন। বকশীবাজারে ছাত্রলীগ হামলা করে বিএনপি অসংখ্য নেতাকে আহত করলেও তাদের (ছাত্রলীগ) নামে কোন মামলা হয়নি। অথচ ওই ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অনেকের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
রাজধানীর শাহজাহানপুরে জিয়াউর রহমান জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘অবৈধ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ঘটনাটিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলো। অথচ আজ স্থানীয় জনগনের সহায়তায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’
এর আগে জোটের শরিকদলগুলোর মহাসচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মির্জা আলমগীর। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরার সদস্য ডা. রেদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আবদুল কাদের, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম. মোস্তফা ভূঁইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ইশা, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, মুসলিম লীগ মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মো. ওয়াক্কাস, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের নির্বাচনের দাবির আন্দোলনে দেশব্যাপী জনমত গঠনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন জেলার পর বেশকয়েক দিন আগে থেকেই গাজীপুরের ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজ মাঠে জনসভার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। ২৭ ডিসেম্বর জনসভার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতিও নেয় দলটি।
কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের করা একটি বিতর্কিত মন্তব্যের পরে জনসভাটি প্রতিহতের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। তারেক রহমানের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে জনসভায় করতে না দেওয়ার হুমকির পাশাপাশি একইস্থানে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় সংগঠনটি। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে সমাবেশস্থলের মাঠ দখল করে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রলীগ।
এই পরিস্থিতিতে গাজীপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদ। শনিবার সন্ধ্যার পর এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
এ পরিস্থিতিতে রাতে দলের জেষ্ঠ্য নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পরে গাজীপুরে হরতাল ও সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।