ব্যাংকের বিনিয়োগসীমায় আটকে গেছে শেয়ারবাজার
২০১৫ মে ০৫ পক্ষকাল প্রতিবেদক : একের পর এক নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার মাধ্যমে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের রাশ টেনে ধরা হয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগসীমা এতটা সংকুচিত হয়েছে যে নতুন বিনিয়োগ দূরে থাকুক, বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগকৃত অর্থ শেয়ারবাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। এতে শেয়ারবাজার বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা আশংকা করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা পুনঃনিধারণ করা হয়। তাতে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমা মূলধনের ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এই মূলধনের মধ্যে রয়েছে আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও সংরক্ষিত আয়। এ ছাড়াও ব্যাংকের ধারণকৃত সকল প্রকার শেয়ার, কর্পোরেট বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড এই বিনিয়োগসীমার আওতাভুক্ত। শেয়ারবাজার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর নিজস্ব বা অন্য যেকোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে দেওয়া ঋণসুবিধাও ওই বিনিয়োগসীমার মধ্যে পড়ে। এ ছাড়া পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গঠিত কোনো প্রকার তহবিলে পরিশোধিত চাঁদাকেও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে ২০১৩ সালের সংশোধিত আইনে।
অর্থাৎ কোনো ব্যাংকের মূলধন যদি ১২০০ কোটি টাকা হয় তবে শেয়ারবাজারে তার বিনিয়োগসীমা হবে ৩০০ কোটি টাকা। ১৯৯১ সালের আইনে ব্যাংকগুলো দায়ের ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারতো। ব্যাংকে সংরক্ষিত আমানতকারীর টাকাকে ওই ব্যংকের দায় বলা হয়। এ ধরনের আরও দায় রয়েছে ব্যাংকগুলোর। দায়ের ১০ শতাংশ বিনিয়োগের সুযোগ থাকাকালীন অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসীমা এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কেননা অধিকাংশ ব্যাংকের দায়ের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশী রয়েছে।
২০১৩ সালে সংশোধিত আইন কার্যকর হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট সীমায় বিনিয়োগ নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ আগের আইন অনুযায়ী দায়ের ১০ শতাংশের পরিবর্তে মূলধনের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগের নিয়ম করায় শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর পূর্বের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে হচ্ছে। কারণ ব্যাংকগুলো দায়ের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করলেও নতুন আইন মানতে মূলধনের ভিত্তিতে বিনিয়োগ সমন্বয় করতে হচ্ছে। সে হিসেবে আগামী ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতে হচ্ছে। ফলে বিক্রিচাপ বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক পতনে বিপর্যস্ত অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে বাজার।
দেখা যাচ্ছে, সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে বিনিয়োগসীমা হিসেবে বিবেচনা করার কারণে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর সব বিনিয়োগ তুলে নিলেই হচ্ছে না। উপরন্তু সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মালিকানাও বিক্রি করতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন সীমার কারণে এখন ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আগের তুলনায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে গেছে। অর্থাৎ আগে একটি ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারলে এখন তার সুযোগ রয়েছে ৩০ থেকে ২০ কোটি টাকা বিনেয়োগের।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২০১৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকটির মোট দায়ের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। আগের সীমা অনুযায়ী ব্যাংক ১ হাজার ৯৫ কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারত।
অপরদিকে ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও সংরক্ষিত আয়ের মোট পরিমাণ হচ্ছে ৫৯৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। ফলে নতুন সীমা অনুযায়ী ব্যাংক বর্তমানে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে মাত্র ১৪৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। অথচ ব্যাংকটির দুটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি এমটিবি সিকিউরিটিজ ও এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণই হচ্ছে ১৫২ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের পুরোটাই মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক যোগান দিয়েছে।
ব্যাংকের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ ১০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক থেকে এমটিবি সিকিউরিটিজের লোনের পরিমাণ হচ্ছে ২৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এখন দেখা যাচ্ছে, শেয়ারবাজারে ব্যাংকটির বিনিয়োগ এবং ঋণ আদায় করে নেওয়ার পরও বিনিয়োগসীমায় নামিয়ে আনতে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি দু’টির মূলধন আরও ৩ কোটি টাকা কমাতে হবে।
ট্রাস্ট ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের মোট পরিমাণ হচ্ছে ৮১১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। হিসাবে ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে ২০২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। অথচ ব্যাংকের দুই সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণই হচ্ছে ৩৩৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সমুদয় অর্থ তুলে নেওয়ার পরও সাবসিডিয়ারি কোম্পানি থেকে আরও ৩২ কোটি টাকা মূলধন প্রত্যাহার করে নিতে হবে। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে ব্যাংকের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ ছিল ৫০ কোটি টাকা।
আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে ব্যর্থ হলে ব্যাংকগুলোকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের পরে অতিরিক্ত বিনিয়োগের জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।
সংশোধিত আইনের আলোকে নির্ধারিত ছকে ব্যাংকগুলোকে তার বিনিয়োগের তথ্য প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হয়। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত বিনিয়োগ কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পৃথক পরিকল্পনা পেশ করতে হয়েছে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও ব্রোকারেজ কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে গঠিত ব্যাংকের নিজস্ব সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন এবং কোনো কোম্পানিতে ব্যাংকের দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে এই সার্কুলার থেকে সরে এসে এ ধরনের বিনিয়োগকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনায় নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তকে দ্বৈতনীতি হিসাবে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। নিজস্ব সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করায় ব্যাংকগুলো বড় ধরনের বিপাকে পড়েছে। অনেক ব্যাংক প্রায় ১০০ ভাগ মূলধন যোগান দিয়ে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের শুরুতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৫ হাজার পয়েন্টে ছিল। আর এখন সে সূচক নেমে এসেছে ৪ হাজার পয়েন্টে। ৪ মে, সোমবার লেনদেনশেষে সূচক ৩ হাজার ৯৫৯ পয়েন্টে নেমে গিয়েছিল। ১৮ মাসের মধ্যে এটি ছিল ডিএসই সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান।
এ ছাড়া তারল্য সংকটও তীব্র হয়ে উঠছে। দৈনিক লেনদেন ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্তের বেড়াজালে ব্যাংকগুলো আটকে পড়ায় শেয়ারবাজারে পতন এবং তারল্য সংকট তীব্র হয়ে উঠছে। শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নমনীয় ভূমিকা পালন না করলে বাজার আরও সংকটে পড়তে পারে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই শুধু নয়, ব্যাংকগুলোও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমাকে শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা হিসাবে মনে করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও (ডিএসই)। ৩০ এপ্রিল ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. স্বপন কুমার বালা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হককে এক বৈঠকে বিষয়টি অবহিত করে সমাধানের অনুরোধ করেন।
গত ৪ মে দেশের শীর্ষ ব্রোকারেজ হা্উস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেও ব্যাংকের বিনিয়োগসীমাকে শেয়ারবাজারের অন্যতম সমস্যা হিসেবে মত দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। কমিশনের চেয়ারম্যান এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য রিপোর্টকে বলেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নমনীয় অবস্থানে রয়েছে। শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমায় নামিয়ে আনার জন্য ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমায় নামিয়ে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘শেয়ারবাজারে কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছেন। কিন্তু ব্যাংকের আমানতকারীর সংখ্যা কয়েক কোটি। আমরা আমানতকারীদের টাকা শেয়ারবাজারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে ব্যাংকগুলোকে সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারি না।’
ব্যাংকের সাবসিডিয়ারির মূলধন ও কোনো কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের বিষয়টি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করা হবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বিশেষ প্রণোদনার অংশ হিসেবে ওই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনীতে সব ধরনের শেয়ারকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। সার্কুলারের চেয়ে আইন ওপরে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে তাদের বিনিয়োগসীমার তথ্য জানাতে নির্দিষ্ট ছক করে দিয়েছি।’ এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ধরনের দ্বৈত ভূমিকা পালন করছে না বলেও তিনি জানান।
তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে রূপান্তর করেছে ব্যাংকগুলো। এখন ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট সীমায় বিনিয়োগ নামিয়ে আনতে হলে বাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সাবসিডিয়ারি কোম্পানির শেয়ারও বিক্রি করে দিতে হবে।
ইস্টার্ন ব্যাংক ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘শুধু সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধনকে বিনিয়োগ সীমা (এ্যাক্সপোজার লিমিট) হিসেবে বিবেচনা করা না হলে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর ৪ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়বে। এটি করা হলে বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে।’
ঢাকা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বর্তমানে যেভাবে এ্যাক্সপোজার লিমিটের হিসাব করা হচ্ছে তাতে নতুনভাবে কোনো ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সম্ভব নয়। তবে যে সব নতুন ব্যাংক এসেছে তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু তাদের দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। আবার ক্রমাগত পতনের কারণে তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে না।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১০ সালে ধস শুরুর আগে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারীর অভাব ছিল। কয়েকটি ব্যাংক আইনি সীমার অতিরিক্ত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ ছাড়া ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে শেয়ারক্রয়ে মার্জিন লোন দেওয়ার ক্ষেত্রেও একক ঋণ গ্রহীতার সীমা মানেনি ব্যাংকগুলো। একদিকে অতিরিক্ত বিনিয়োগ অপরদিকে আগ্রাসি অর্থায়নের মাধ্যমে শেয়ারবাজার উল্লম্ফনে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্যাংকগুলো।
কিন্তু ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ধসের পর থেকে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত না নিলে শেয়ারবাজারসহ ব্যাংকগুলো সংকটের মুখ পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।