ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর নাতনি
পক্ষকাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার দিনভর ভোট শেষে স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের ভোট গণনা কেন্দ্রে ফল ঘোষণার পর লেবার পার্টির প্রার্থী উপস্থিত বাংলাভাষী সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে সবচেয়ে মনে পড়ছে আমার খালাকে। কারণ উনি আমাকে সবচেয়ে বেশি শিখিয়েছেন।
“রাজনীতি নিয়ে উনার কাছ থেকেই সব শিখলাম। সোশাল জাস্টিসটা শিখলাম। শিখলাম কীভাবে ক্যাম্পেইন করতে হয়। মানুষের কাছে যেতে হয়। খালাকেই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে। ফোন করেছি, খালাকে বলেছি খুশির খবরটা।”
সেই সঙ্গে মা শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যদের এবং স্বামী ক্রিস পার্সির প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এই ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ।
তিনি বলেন, “আমাকে এই সময় আমার মা-বাবা আনেক সাপোর্ট দিয়েছে। পরিবার আর হাজবেন্ডের সাপোর্ট ছাড়া কিন্তু লড়া যায় না।”
এ আসনে ১১৩৮ ভোটে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন বাংলার মেয়ে টিউলিপ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনায় অনেক আগে থেকেই ব্রিটিশ গণমাধ্যমের মনোযোগ ছিল এ আসন। আর সঙ্গে ছিল টিউলিপের কাছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিশাল প্রত্যাশা।
জয়ের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ৩২ বছর বয়সী টিউলিপ বলেন,
“আসলে আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। দু’বছর ধরে ক্যাম্পেইন করছি। আমি আমার নিজের এলাকায় এমপি হয়েছি। আমি আমার নিজের এমপি। এখনও আবাক লাগছে। মানুষের দোয়ায়, মানুষের সাহায্য আজ এই জয় এনে দিয়েছে।”
তবে নির্বাচনের পুরো ফল না দেখে লেবার পার্টির পরাজয় নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ।
তিনি বলেন, জাতিগত পরিচয় দেখে নয়, সবাইকে নিয়ে সবার জন্য তিনি কাজ করতে চান।
“আমরা ব্রিটিশ বাঙলি। আমরা সবাই সবাইকে সাপোর্ট করি। খবরে দেখলাম রুশনারা আপাও জিতেছে। আমার খুব ভাল লেগেছে। রূপা আপাও জিতেছে। এখন আমরা তিনজন বাঙালি মেয়ে পার্লামেন্টে। আমরা যদি একসাথে কাজ করি তবে অনেক কিছু করা যাবে আমাদের কমিউনিটির জন্য।”
‘মারামারি কাটাকাটি আর নেগেটিভ ক্যাম্পেইন’ চালিয়ে গেলে প্রবাস জীবনে বাঙালি কমিউনিটি আরও পিছিয়ে পড়বে বলেও টিউলিপ উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “আমার খুব দুঃখ লেগেছে যখন দেখালাম মানুষ আমাকে নিয়ে নেগেটিভ ক্যাম্পেইন করছে। আমার পরিবার নিয়ে অনেক মিথ্যা কথাও বলেছে। আর ওদের লিফলেট নিয়েতো এখন পুলিশ রিপোর্টও হয়েছে। যতই নেগেটিভ ক্যাম্পেইন করুর মানুষ ভোট দেয় পলিসি এবং ক্যারেক্টার দেখে।”
ভবিষ্যতের নির্বাচনে এ বিষয়গুলো সবাই মাথায় রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন টিউলিপ।
পাঁচবছর আগে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি হিসাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যান সিলেটের মেয়ে রুশনারা আলী। এবারও তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। এছাড়া লন্ডনের আরেকটি আসন থেকে এবার জয়ী হয়েছেন রূপা হক। তারা তিনজনই লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।