শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

Daily Pokkhokal
শনিবার, ৯ মে ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » পুলিশ বন্দুকযুদ্ধ বললেও ঘটনাস্থলে আলামত নেই
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » পুলিশ বন্দুকযুদ্ধ বললেও ঘটনাস্থলে আলামত নেই
২৯১ বার পঠিত
শনিবার, ৯ মে ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পুলিশ বন্দুকযুদ্ধ বললেও ঘটনাস্থলে আলামত নেই


২০১৫ মে ০৯ ---
খুলনা প্রতিনিধি : খুলনার বাগমারা বুড়ির বাগান এলাকায় গত মঙ্গলবার আটকের ছয় ঘণ্টা পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান আল-মামুন সবুজ নামে এক যুবক। পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন অপর যুবক ওমর ফারুক (২৬)।

সদরের রায়পাড়া ক্রসরোডের মিস্ত্রিপাড়া থেকে মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস ওই দিন জানিয়েছিলেন, আটক দু’জনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বুড়ির বাগান এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। এ সময় ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই মামুন মারা যায়, ওমর ফারুক গুলিতে আহত হয়।

তবে পুলিশ ঘটনাকে বন্দুকযুদ্ধ দাবি করলেও দ্য রিপোর্টের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন তথ্য। ঘটনাস্থল বুড়ির বাগান এলাকায় বুধবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের কোনো আলামত নেই। সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা যদি ঘটনাস্থলে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত থাকেন তাহলে সেখানে দৌড়াদৌড়ির কিংবা ঝোপ-জঙ্গল নুয়ে পড়ার চিহ্ন থাকবে। কিন্তু আশপাশের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে না এখানে কোনো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।

নিহতের ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আল-মামুনের দেহে চারটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। মাথা, বুকে, পিঠের সামনে এবং পেছনে গুলি করা হয়েছে। খুব কাছ থেকে গুলি করায় চারটি গুলি দেহ ভেদ করে অপর পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে।

ওই দুই যুবককে আটক করার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আটক দুই যুবকই খুব স্বাভাবিক ছিল। এর মধ্যে আল-মামুন নিজের মোবাইল দিয়ে তার বয়রা এলাকার নেতার কাছে ফোন করে উপ-পরিদর্শক (এসআই) অরুণকে কথা বলতে বলেন।

অরুণ দ্য রিপোর্টকে জানান, মোবাইলে কথা বলতে দেখে তিনি দুই যুবকের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল সেটই জব্দ করেন। তিনি কোনো নেতার সঙ্গে কথা বলেননি বলেও দাবি করেছেন।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশের কাছে দুই যুবক নিজেদের নাম আল-মামুন ও ওমর ফারুক বললেও তাদের পুরো নাম আল-মামুন সবুজ এবং ফারুক হোসেন। মামুনের গ্রামের বাড়ী বাগেরহাট জেলার রামপালের বর্নি গামে। তারা চার ভাই ও তিন বোন। মামুন খালিশপুরে একটি বাসার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে ব্যাচেলর হিসেবে বসবাস করতেন। তবে ২০১২ সালে শামীমা আক্তার নীলুকে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তিনি। এই দম্পতির ৮ মাসের এক শিশু সন্তান রয়েছে। মামুন তার স্ত্রীকে কোনো দিন বাগেরহাটে নিয়ে যায়নি বা নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়নি।

নীলুর ছোটবোন নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, তারা মামুনকে সবুজ নামেই চিনতেন। সবুজ নিজেকে ঘের (চিংড়ি ঘের) ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিত।

নীলুর ভাই আলী আহমেদ জানান, নীলু নিজ ইচ্ছায় প্রেম করে বিয়ে করায় তাদের সাথে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না।

তবে আলী আহমের স্ত্রী জানান, দুলাভাই (সবুজ) ঘটনার দিন ঢাকা থেকে এসেছে বলে জানিয়েছিল। দুপুরে গরুর মাংস রান্না করতে বলেছিল। খেতে যাওয়ার আগে বয়রা এলাকার তার এক বড় ভাই মোবাইলে ফোন করলে সে না খেয়েই বেরিয়ে পড়ে।

বয়রা এলাকার এই বড় ভাই হলেন বাহাউদ্দিন যিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

ওদিকে ওমর ফারুকের এলাকায় পরিচিত ছিলেন জিএম ফারুক হোসেন হিসেবে। তিনি বাবা-মাসহ বাগমারা এলাকায় বসবাস করতেন। ফারুকের বাবা শামসুল হক খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।

শামসুল হক জানান, অর্থের অভাবে ছেলেকে বেশি পড়ালেখা করাতে পারেননি। তার ছেলে বয়রার আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিনের ফার্মে চাকরি করত। বাগেরহাট জেলে থাকাকালে মামুনের সাথে তার পরিচয় হয়েছিল। ঘটনার দিন ফারুক বয়রা থেকে বাসায় আসার পথে মামুন তাকে ডেকে রিকশায় উঠায়।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার তিনি বাহাউদ্দিনের সাথে দেখা করেছেন। তবে বাহাউদ্দিন এ ব্যাপারে সাহায্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

ফারুকরা পাঁচ ভাই ও চার বোন। এদের মধ্যে ফারুক সবার ছোট।

দুপুরে আটক রাতে নিহত

কেন মামুনকে আটক করা হয়েছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘তিনটি পিস্তল আর একটি রিভলবার লোড করে মামুন অভিযানে যাচ্ছিল। সেই অভিযান সফল হলে পুলিশ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে ওসি, এসি, ডিসি ও পুলিশ কমিশনারের বদলিসহ শাস্তির ব্যবস্থা হতো। এতে দীর্ঘদিন পর খুলনায় আবারও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড শুরু হতো।’

গডফাদারকে রক্ষা করতেই কি তড়িঘড়ি ক্রসফায়ার? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গডফাদারকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আল-মামুন একজন ভাড়াটে কিলার। সে স্বীকার করেছে যে, মংলায় দিনের বেলায় গুলি করে লোক হত্যা করেছে। খুলনার দলিল লেখক জাকির হোসেন হত্যাকাণ্ডের সময় সে জেলে ছিল বলে দাবি করেছে। সব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।’

তিনি জানান, বন্দুকযুদ্ধের পর সেখান থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। একই সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিজেও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সুকুমার।

এদিকে বন্দুকযুদ্ধে আহত ফারুককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ফারুককে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।



এ পাতার আরও খবর

বলাতকারের অভিযোগে রুমন গ্রেপ্তার বলাতকারের অভিযোগে রুমন গ্রেপ্তার
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাত করায় জাতীয় নাগরিক কমিটির পিংকি কারাগারে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাত করায় জাতীয় নাগরিক কমিটির পিংকি কারাগারে
স্লিপার বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার স্লিপার বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার
মাগুরায় এনজিও ও দরবারের টাকা আত্মসাৎ,  হজ্বের আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান মাগুরায় এনজিও ও দরবারের টাকা আত্মসাৎ, হজ্বের আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান
চট্টগ্রামে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, মেয়রসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা চট্টগ্রামে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, মেয়রসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
মাগুরায় এনজিও ও দরবারের টাকা আত্মসাৎ,  হজ্বের আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান মাগুরায় এনজিও ও দরবারের টাকা আত্মসাৎ, হজ্বের আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান
কালিয়াকৈরে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মুরগী ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার। কালিয়াকৈরে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মুরগী ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার।
হবিগঞ্জে একদিনে শিশুসহ চারজনকে ধর্ষণের অভিযোগ হবিগঞ্জে একদিনে শিশুসহ চারজনকে ধর্ষণের অভিযোগ
প্রসঙ্গঃ-মানুষ মারার সাম্রাজ্যবাদী, পোশাকিভদ্রতা ও মেকিসভ্যতার উন্নয়ন আমরা চাই না! প্রসঙ্গঃ-মানুষ মারার সাম্রাজ্যবাদী, পোশাকিভদ্রতা ও মেকিসভ্যতার উন্নয়ন আমরা চাই না!
জালিয়াতি  কান্ড :ইসরাইল থেকে পুরস্কার পেয়ে ইউনেস্কোর বলে চালালেন  ইউনূস জালিয়াতি কান্ড :ইসরাইল থেকে পুরস্কার পেয়ে ইউনেস্কোর বলে চালালেন ইউনূস

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)